জেনে নিন পরিবেশ দূষণের বিষ থেকে মুক্ত থাকার উপায়
প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০১৭, ১৭:৫২
বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বাড়ছেই। ফলে যতই দিন যাচ্ছে, ততই অক্সিজেনের সঙ্গে লড়াই বাড়ছে বিষ বাষ্পের। আর তাতে যে বিষ ধোঁয়ারই জয় হচ্ছে, তাও স্পষ্ট।
কারণ বিশ্বব্যাপী পরিবেশ দূষণজনিত কারণে অসংখ্য মানুষ ইতিমধ্যেই নানা রোগ বালাইয়ে আক্রান্ত হয়ে মরতে শুরু করেছ বলে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। এই লেখায় বায়ু দূষণের হাত থেকে বাঁচার এমন কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে, যা বাস্তবিকই বেশ কার্যকরী। চলুন জেনে নেওয়া যাক বায়ু দূষণের আক্রমণ থেকে বাঁচাতে পরে এমন ঘরোয়া পদ্ধতিগুলি সম্পর্কে.....
১. তুলসি পাতা
বাড়ির বাইরে তুলসি গাছ লাগানো আছে তো? না থাকলে আজই লাগান। কারণ একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে বায়ু দূষণের প্রভাব কমাতে তুলসি গাছ দারুনভাবে সাহায্য করে থাকে। আসলে তুলসি পাতা, বাতাসে উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদানদের শোষণ করে নেয়। ফলে বাতাসে বিষের পরিমাণ কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে প্রতিদিন যদি ১০-১৫ মিলি লিটার করে তুলসির রস খাওয়া যায়, তাহলে আমাদের শরীরের উপর বায়ু দূষণের যে কুপ্রভাব পড়ছে, তা কমতে শুরু করবে।
২. হলুদ
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১ চামচ হলুদ গুঁড়োর সঙ্গে ১ চামচ ঘি বা মধু মিশিয়ে খাওয়া শুরু করুন। তাহলেই দেখবেন বায়ু দূষণ আপনার টিকিও ছুঁতে পারবে না।
৩. ঘি
রাতে শুতে যাওয়ার আগে এবং প্রতিদিন সকালে নাসারন্ধ্রে দুই ফোটা করে ঘি ফেলবেন। সেই সঙ্গে প্রতিদিন ২-৩ চামচ ঘি খেলে বায়ু দূষণের কারণে শরীরের ক্ষতি হওয়ার কোনও আশঙ্কাই থাকবে না। আসলে ঘিতে উপস্থিত বেশ কিছু কার্যকরি উপাদান বায়ু দূষণের খারাপ প্রভাবকে কমিয়ে দেয়। ফলে শরীরের ক্ষয়ে যাওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশেই হ্রাস পায়।
৪. নিম
পরিমাণ মতো পানিতে নিম পাতা ফুটিয়ে সেই জল দিয়ে সপ্তাহে কয়েকবার ঘাড় এবং মাথা পরিষ্কার করতে হবে। এমনটা করলেই শরীরের বহিরাংশে পরিবেশ দূষণের খারাপ প্রভাব কমতে শুরু করবে। প্রসঙ্গত, পরিবেশে উপস্থিত একাধিক ক্ষতিকর উপাদান আমাদের ত্বকের উপর স্থায়ী ঘর বানিয়ে শরীরের নানাবিধ ক্ষতি সাধন করে থাকে। এদের মেরে ফেলতেও নিম পাতা দারুন উপকারে লাগে। এক্ষেত্রে একটা বিষয় জেনে রাখা জরুরি যে, নিয়মিত যদি নিমপাতার পানি দিয়ে গোসল করা সম্ভব না হয়, তাহলে প্রতিদিন ৩-৪টি নিম পাতা খেতেই হবে। এমনটা করলেও সমান উপকার পাবেন।
৫. ত্রিফলা
বায়ু দূষণের মধ্যে দীর্ঘ সময় থাকলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হতে শুরু করে। ফলে একে একে ভয়ঙ্কর সব সংক্রমণ শরীরের এসে বাসা বাঁধে। এক্ষেত্রে ত্রিফলা আপনাকে সাহায্য করতে পারে। কীভাবে? প্রতিদিন রাতে ১ চামচ পরিমাণ ত্রিফলার সঙ্গে ১ চামচ মধু মিশিয়ে খাওয়া শুরু করুন। তাহলেই আর কোনও চিন্তা থাকবে না। কারণ ত্রিফলা এবং মধু, উভয়ই পরিবেশ দূষণের কুপ্রভাব থেকে বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৬. ডালিমের রস
প্রতিদিন সকালে, না হয় বিকালে ১ গ্লাস করে ডালিমের রস খাওয়া শুরু করুন। এই প্রকৃতিক উপাদানটি রক্তকে পরিশুদ্ধ করার পাশাপাশি হার্ট এবং ফুসফুসকে সুস্থ রাখতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।
৭. বডি মাসাজ
প্রতিদিন গরম সরিষার তেল দিয়ে সারা গায়ে মাসাজ করলে স্ট্রেস কমে যায়। সেই সঙ্গে শরীর একেবারে ভেতর থেকে চাঙ্গা হয়ে ওঠে। এক কথায় বলা যেতে পারে, শরীরকে পুনরায় চার্জড আপ করে তুলতে বডি মাসাজের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।
৮. গরম ভাঁপ নেওয়া
এক বাটি গরম পানিতে কয়েক ফোটা পিপারমেন্ট তেল ফেলে সেই পানির গরম ভাঁপ নিলে দারুন উপকার পাওয়া যায়। তবে এমনটা দিনে কম করে ২ বার করতেই হবে। তবেই পরিবেশ দূষণের খারাপ প্রভাব থেকে দূরে থাকতে পারবেন, না হলে কিন্তু সেভাবে উপকার নাও পেতে পারেন।
৯. বাড়িতে তৈরি গরম খাবার
নিশ্চয় ভাবছেন পরিবেশ দূষণের সঙ্গে বাড়িতে তৈরি গরম খাবারের কী সম্পর্ক, তাই তো? আসলে যে কোনও বাঙালি পদে আমরা, হলুদ, লঙ্কা, গোল মরিচ সহ নানাবিধ মশলা দিয়ে থাকি। এই সব মশলাগুলি নানাভাবে আমাদেরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে আমাদের শরীরের উপর পরিবেশ দূষণের প্রভাব যাতে কম পড়ে, সেদিকেও খেয়াল রাখে। তাই তো জাঙ্ক ফুড নয়, বেশি করে খাওয়া শুরু করুন বাড়িতে বানানো খাবার।
১০. প্রতিদিন যোগ ব্যায়াম জরুরি
নিয়মিত যোগব্যায়াম করলে পরিবেশ দূষণের কোনও প্রভাবই শরীরের উপর পড়ে না।
সূত্র: বোল্ড স্কাই