গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি

কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে গাইবান্ধার বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে।

ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি ১২০ সি.মি বেড়ে বিপদসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার এবং ঘাঘট নদীর পানি ১১৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ও করতোয়া নদীর পানিও বেড়ে বিপদসীমার ৩ সিন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে গাইবান্ধা জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে।

এদিকে বন্যা কবলিত হওয়া ১০৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের ভেতরে পানি থাকায় এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণে বিদ্যালগুলো বন্ধা ঘোষণা করা হয়। গতকাল জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় বন্ধ হওয়া বিদ্যালয়গুলো এবং যেগুলো আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা সেগুলো খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে।

সোমবার জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার ২৬টি ইউনিয়নের ৩৪ হাজার ৯৫৬টি পরিবার বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এদিকে শহর রক্ষা বাঁধের খোলাহাটি, চকমামরোজপুরসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বালির বস্তা ফেলে হলদিয়া ও কামারজানিসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। এছাড়া সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় বন্যার পানির স্রোতে সুন্দরগঞ্জ ও পঞ্চনন্দ সড়ক ভেঙে যাওয়ায় ওই এলাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

অপরদিকে গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা, ফুলছড়ি, গাইবান্ধা সদর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেক এলাকায় কাঁচা পাকা সড়কের উপর দিয়ে পানি ওঠায় যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এমনকি পানিবন্দি মানুষজন নিরাপদ আশ্রয়ে আসতে শুরু করেছে।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পালন জানান, বন্যা কবলিত মানুষদের জন্য এ পর্যন্ত ৫শ’ মে. টন চাল ও নগদ ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বন্যা কবলিত মানুষের নামের তালিকা তৈরির জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনকে বলা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ি জরুরী ভিত্তিতে তাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হবে।