দেশ সেরা রাজশাহী, পাশের হার ৯০ দশমিক ৭০ শতাংশ
প্রকাশ : ০৪ মে ২০১৭, ১৭:২০
রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে এবার এসএসসিতে পাসের হার ৯০ দশমিক ৭০ শতাংশ। গত পাঁচ বছরের মধ্য এবারই সব চেয়ে কম পাশের হার। গতবারের চেয়ে কমেছে জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা। তবুও টানা তৃতীয়বারের মত এসএসসির ফলাফলে দেশ সেরা হয়েছে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড।
৪ মে (বৃহস্পতিবার) বেলা ১টার দিকে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে তথ্য জানান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রন অধ্যাপক তরুণ কুমার সরকার।
সংবাদ সম্মেললে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জানান, এবার পাশের হার ৯০ দশমিক ৭০ শতাংশ। গেলো বার তা ছিলো ৯৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। এর আগে পাশের হার ছিলো ২০১৩ সালে ৯৪ দশমিক ০৩ শতাংশ এবং ২০১৪ সালে ৯৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বোর্ডে সচিব ড. আনারুল হক প্রামানিক, কলেজ পরিদর্শক আকবর হোসেন, প্রধান মূল্যায়ন কর্মকর্তা গোলাম আজম, সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম, জনসংযোগ কর্মকর্তা এএফএম খাইরুল ইসলাম প্রমুখ।
তিনি জানান, এবার বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিলো এক লাখ ৬৭ হাজার ৬৯০ জন। এর মধ্যে পাশ করেছে এক লাখ ৫১ হাজার ৪০৬ জন। অনুপস্থিত ছিলো ৬৫২ জন পরীক্ষার্থী।
এবছর ৯১ দশমিক ৪৪ শতাংশ মেয়ে এবং ৯০ দশমিক ০১ শতাংশ ছেলে পাশ করেছে। এবছর মোট জিপিএ ৫ পেয়েছে ১৭ হাজার ৩৪৯ জন। এর মধ্যে ৮ হাজার ২৭৪ জন মেয়ে এবং ৯ হাজার ৭৫ জন ছেলে।
গতবছর জিপিএ ৫ পেয়েছিলো মোট ১৭ হাজার ৫৯৪ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে ৮ হাজার ১৮৯ জন মেয়ে এবং ৯ হাজার ৪০৫ জন ছেলে। এর আগে ২০১৫ সালে ১৫ হাজার ৮৭৩ জন এবং ২০১৪ সালে ১৯ হাজার ৮১৫ জন জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।
এদিকে, অংশগ্রহণকারী বিদ্যালয় বাড়লেও গত চার বছরের ব্যবধানে শতভাগ পাশের বিদ্যালয় নেমেছে অর্ধেকে। এবছর রাজশাহী বোর্ডে শতভাগ শিক্ষার্থী পাশ করেছে এমন বিদ্যালয় রয়েছে ৪২৯টি। গতবছর তা ছিলো ৮০০টি। এর আগে ২০১৫ সালে ৯৬৯টি এবং ২০১৪ সালে এক হাজার ৫৫টি বিদ্যালয় থেকে শতভাগ পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়। এবছর বিদ্যালয় সংখ্যা ছিলো ২ হাজার ৬৩২টি। ২০১৪ সালে এ সংখ্যা ছিলো ২ হাজার ৫৪২।
বোর্ডে এবছর একমাত্র আলাতুলি উচ্চবিদ্যালয় থেকে কোন পরীক্ষার্থী পাশ করেনি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের এ বিদ্যালয় থেকে মাত্র দুজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়।
এবারের পরীক্ষায় বহিষ্কৃত হয়েছে ১৩ পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে নাটোরের নলডাঙ্গায় ২জন, নওগাঁর পতিœতলায় ৪জন, পাবনার আটঘরিয়া ও সাঁথিয়ায় ২জন, সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় ৩জন এবং বগুড়ার শিবগঞ্জে ২ জন। এববছর কারাগার থেকে তিন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এদের একজন পাশ করেছে। একজন ফেল করেছে। অন্যজনের ফলাফল রয়েছে স্থগিত।
এবছর প্রতিবন্ধি পরীক্ষার্থী ছিলো ১৭ জন। এদের ৩ জনের ফলাফল স্থগিত রয়েছে। বাকিরা পাশ করেছে বিভিন্ন গ্রেডে।
ফলাফল সার্বিকভাবে ভালো হয়েছে দাবি করে এতে সন্তোষ প্রকাশ করেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তরুণ কুমার সরকার। তিনি বলেন, ‘ফলাফল খারাপ হয়েছে বলার সুযোগ নেই। ব্যবধান যেটা সামান্য, ব্যাপক নয়। অনুপস্থিতি, বহিস্কার, এমনটি শুণ্য পাশ বিদ্যালয়ের সংখ্যা কমছে।’
তিনি বলেন, ‘এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন থাকবে কিনা আমরা সরেজমিন তদন্ত করে দেখবো। পরে মন্ত্রনালয়ে প্রতিবেদন দেবো। মন্ত্রনালয় তাদের বিষয়ে স্বীদ্ধান্ত নেবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এবার অকৃতকার্য হয়েছে প্রায় ৯ শতাংশের কম শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অকৃতকার্য হয়েছে গণিতে, প্রায় ৬ শতাংশের কাছাকাছি। এছাড়া বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়েও অকৃতকার্য হয়েছে শিক্ষার্থীরা।’
এদিকে, শিক্ষাবোর্ডে আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণার পর প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এসময় জিপিএ পাঁচ প্রাপ্তরা আনন্দে ফেটে পড়ে। ভালো ফলাফলে উচ্ছ্বসিত অভিভাবক ও শিক্ষকরাও।