ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন; বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চেয়েছেন ছাত্রলীগ নেত্রী

প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৩, ১৫:৫০

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা তার সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহর চেয়ে আবেদন করেছেন। একই সঙ্গে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ ও তার আটকে থাকা তৃতীয় বর্ষের ফল প্রকাশের অনুরোধ জানিয়ে বুধবার (১৩ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন জমা দিয়েছেন। 

আবেদন সূত্রের বরাত দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসান জানান, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, ক্লাস ও পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি প্রদান এবং তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার ফল প্রকাশের অনুরোধ করেন।

হলে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় গত ৪ এপ্রিল ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় অন্তরাকে সাময়িক বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। পরে রেজিস্ট্রার অফিস থেকে দুই দফায় কারণ দশানোর নোটিশ দেওয়া হলেও তাতে সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় আইনের কোনো ধারা উল্লেখ করা হয়নি। এ বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসান বলেন, ‘আবেদনটি হাতে পাওয়ার পর সেটি একাডেমিক শাখায় পাঠিয়েছি। এটি আইন প্রশাসকের মতামতের জন্য পাঠানো হবে। তার মতামত নিয়ে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’

অন্তরা বলেন, ‘আমি দৃঢ়চিত্তে বলতে পারি আমি উক্ত র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় কোনোভাবেই অংশ নেইনি। তাছাড়া আমাকে যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে তার কোনো কারণও নোটিশে উল্লেখ কর হয়নি। যদি আমি দোষীও হই, পরীক্ষা তো এ ঘটনার আগেই শেষ হয়েছে। তাহলে রেজাল্ট কেন আটকে থাকবে?’

পরীক্ষা কমিটির সভাপতি পরিসংখ্যান বিভাগের প্রফেসর ড. কামাল উদ্দীন বলেন, ‘ফল স্থগিতের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় অথরিটি ভালো জানে। আমরা রেজাল্ট সাবমিট করার সময় কর্তৃপক্ষকে চিঠিতে দিয়েছিলাম যে, বিশ্ববিদ্যালয় তাকে (অন্তরা) সাময়িক বহিষ্কার করেছে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুরোধ করা হলো।’

প্রসঙ্গত, গত ১১ ও ১২ই ফেব্রুয়ারি দুই দফায় দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে এক নবীন ছাত্রীকে রাতভর র‌্যাগিং, শারীরিকভাবে নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করার অভিযোগ উঠে ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরাসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ফুলপরী খাতুন ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। পরে ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১৫ই ফেব্রুয়ারি পৃথকভাবে তিনটি তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষ ও শাখা ছাত্রলীগ। এছাড়া হাইকোর্টের নির্দেশেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। এদিকে নির্যাতনের সত্যতা পাওয়ায় ১লা মার্চ জড়িত পাঁচ ছাত্রীকে বহিষ্কারাদেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

জাগরণীয়া/ডিএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত