যৌন নিপীড়কের অভয়ারণ্য রাবি: পিছিয়ে নেই শিক্ষকরাও
প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০১৬, ২১:১০
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন ছাত্রীরা। এসব ঘটনার সাথে কেবল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাই জড়িত নন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও ছাত্রীদেরকে শারীরিক ও মানসিকভাবে যৌন হয়রানি করছেন। যৌন হয়রানি শিকার ছাত্রীরা এসব ঘটনায় মুখ খুললেও ন্যায্য বিচার পায় না।
ছাত্রীদের অভিযোগ, সন্ধ্যাবেলা ক্যাম্পাসের কোনো রাস্তা দিয়ে একা হাঁটাচলা করতে পারে না তারা। যেসব ছাত্রী বোরকা পড়ে বের হন তাদের উদ্দেশ্য করে নানা রকম কটুক্তিমূলক কথা বলে কিছু শিক্ষার্থী। আবার যেসব ছাত্রী বোরকা ছাড়া বের হয় তাদেরকে উদ্দেশ্য করে নানা রকম অশ্লীল মন্তব্য করে কিছু শিক্ষার্থী। এমনকি সুযোগ পেলেই ওই ছাত্রীদের গায়ে ঘেঁষারও চেষ্টা করের ওইসব শিক্ষার্থী।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওইসব শিক্ষার্থীর অধিকাংশই ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ততা থাকলেও অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীও যৌনহয়রানিমূলক ঘটনার সাথে জড়িত। সাধারণ শিক্ষার্থীরা যখন বন্ধুদের সাথে দল বেঁধে আড্ডা দেয় কিংবা রাস্তা দিয়ে হাঁটে তখন কোনো নারী শিক্ষার্থী তাদের সামনে পড়লেই যৌন হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। অন্য দিকে কোনো ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর পাশ দিয়ে কোনো মেয়ে হেঁটে গেলেই বেপরোয়া হয়ে উঠে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
গত কয়েক বছরের বিভিন্ন ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ছাত্রলীগ কর্মী রিনেট ক্যাম্পাসের টুকিটাকি চত্বর সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে দুই বন্ধুকে নিয়ে রিকশা চালাচ্ছিলেন। এসময় রাস্তা দিয়ে পাশাপাশি হেঁটে যাচ্ছিলেন দুই ছাত্রী ও এক ছাত্র। তাদেরকে অনেকটা চাপা দিয়েই রিকশা চালাচ্ছিলেন ওই ছাত্রলীগ কর্মীরা। তাৎক্ষণিক এর প্রতিবাদ করেন ওই ছাত্রীরা। এ ঘটনায় ছাত্রীদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন ওই ছাত্রলীগ কর্মী ও রিকশায় চড়ে থাকা বাকি দুই ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ওই ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করলে প্রতিবাদ জানান ছাত্রীদের সঙ্গে থাকা ছাত্রটি।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ছাত্রকে মারধর করে আহত করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। হাতে থাকা ছাতা ছিনিয়ে নিয়ে আঘাত করলে ওই শিক্ষার্থীর মুখের কয়েক জায়গায় গুরুতর জখম হয়। এই ঘটনায় রিনেট ও হীরককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এদিকে গত ৩ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে সাইকেল চাচ্ছিলেন এক ছাত্রী। এমন সময় ছাত্রলীগকর্মী সাকিবসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই ছাত্রীকে উদ্দেশ্য করে কটুক্তি করে। সাইকেল থামিয়ে তাদের দিকে তাকানোর সাথে সাথেই তারা ছুটে আসে এবং বলতে থাকে, ‘আপু হেল্প লাগবে?’ এসময় আরো কিছু বাজে শব্দ ব্যবহার করে তারা। এছাড়াও সাইকেলের হ্যান্ডেল ঠিক করে দেবার অযুহাতে তারা শারিরীকভাবে লঞ্চিত করে।’
অন্যদিকে, ইংরেজি বিভাগের এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় গেলো বছরের শেষের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬২তম সিন্ডিকেট সভায় মনোবিঞ্জান বিভাগের ২ শিক্ষার্থীকে ১ বছরের জন্য বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এই ঘটনার সাথে জড়িত একই বিভাগের আরো ৭ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যৌন হয়রানির অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের জিএম আব্দুল ওহাব নামের এক শিক্ষককে ৩ বছরের জন্য ক্লাস, পরীক্ষা গ্রহণ থেকে বহিষ্কার (সাসপেন্ড) করা হয়েছিল। তবে যৌন হয়রানির বিষয়টি ধামা-চাপা দেওয়ার জন্য সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষকরা আদাজল খেয়ে লেগেছিলেন বলে অভিযোগ আছে। বিভাগীয় সম্মান হানির ভয়ে বিভাগের কোনো শিক্ষকই সাংবাদিকদের সামনে মুখ খুলতে রাজি ছিলো না।
জানা যায়, সমাজকর্ম বিভাগের রিপন হোসেন নামক এক জুনিয়র শিক্ষকের শালিকাকে দীর্ঘদিন যাবৎ একই বিভাগের সহকারি অধ্যাপক জিএম আব্দুল ওহাবের উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। একই সাথে তাকে বিভিন্নভাবে অনৈতিক ভাবে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য চেষ্টা করে। অনৈতিক ব্যবহারের অভিযোগে ওই মেয়ে পরে বিভাগীয় সভাপতি বরাবর অভিযোগপত্র দাখিল করে। তার অভিযোগ পাবার পর বিভাগ থেকে গোপনে কয়েকবার বৈঠক বসে। কিন্তু দাম্ভিক প্রকৃতির ওই শিক্ষক বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকের বিরুদ্ধেও অশালীন মন্তব্য করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে অত্যন্ত সু-কৌশলে অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুল ওহাবের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে মাত্র ৩ বছরের জন্য সকল প্রকার ক্লাস, পরীক্ষা ও আনুসঙ্গিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয় বলে জানা গেছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির দায়ে ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মজুমদারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ৪৬৫তম সভায় কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো বলে জানা গেছে। শাস্তিপ্রাপ্ত ওই শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির তৎকালীন সভাপতি ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ছিলেন।
২০১৪ সালের ২১ অক্টোবর বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়। ছাত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নিপীড়ন নিরোধ কমিটি তদন্ত শুরু করে। তদন্তের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ২০১৫ সালের ২৭ এপ্রিল অভিযুক্ত শিক্ষককে চাকুরিচ্যুত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট সুপারিশ করে। নিপীড়ন নিরোধ কমিটির সুপারিশ সিন্ডিকেটে ৪৬১তম সভায় উত্থাপন করা হয়। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি ও অভিযুক্ত শিক্ষকের বিভাগের অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান পুনরায় তদন্তের দাবি জানায়। এরই প্রেক্ষিতে আলোচনা সাপেক্ষে কোষাধ্যক্ষ সায়েন উদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি রিভিউ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ওই কমিটি পুনরায় তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া সত্বেও বয়স ও শিক্ষকের সম্মানের কথা বিবেচনা করে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর সুপারিশ করে।
অধ্যাপক কামরুল হাসান মজুমদার ওই ছাত্রীকে মোবাইলে একাধিকার আপত্তিকর প্রস্তাব দেন। তার প্রস্তাবে সম্মত হলে বিভাগে ভালো ফলাফলের নিশ্চয়তাসহ শিক্ষক হওয়ার লোভনীয় সুযোগের ব্যাপারে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেন। ওই ছাত্রী তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। ছাত্রী লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, প্রথম দিকে তিনি শিক্ষককে নানাভাবে নিবৃত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু দিন দিন শিক্ষকের হয়রানির মাত্রা আরও বেড়ে যায়। পরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দেন তিনি।
তবে যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাওন উদ্দিন নামের এক শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫০তম সিন্ডিকেট বৈঠকে। ২০১২ সালের আগস্টে বিভাগটির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পেরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে।
২০১০ সালে শাওন উদ্দিন ব্যবস্থাপনা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০১২ সালের আগস্টে ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের এক ক্লাসে ছাত্রীদের উদ্দেশ্য করে তিনি অশালীন মন্তব্য করেন। ওই সময়ে শিক্ষার্থীদের দেওয়া অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছিল যে, শাওন উদ্দিন ক্লাসে যৌন উত্তজেনামূলক কথা বলেন। ছাত্রদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। ছাত্রীদের বলেছিলেন, ‘পাঁচশ টাকায় তোমাদের বাজারে পাওয়া যায়।’
এছাড়াও সিন্ডিকেটের ওই সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককের বাসায় এক ছাত্রীকে গানের প্রশিক্ষণ দেয়ার সময় যৌন হয়রানির দায়ে টিএসসিসির প্রশিক্ষক সানোয়ার হোসেনকেও বরখাস্ত করা হয়।
এদিকে ২০১০ সালে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক জুলফিকারুল আমীনের বিরুদ্ধে এক ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগ আনে। যে অভিযোগে শিক্ষক শাওনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়, এর চেয়ে গুরুতর ছিল সে অভিযোগ। কিন্তু জুলফিকারের ব্যাপারে প্রশাসন পক্ষপাতদুষ্ট সিদ্ধান্ত নিয়ে শুধু সাময়িকভাবে ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কাজী জাহিদুর রহমান নামের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধেও যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছিলো। ওই শিক্ষক ২০১০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে যোগ দেন। যোগদানের পরপরই তিনি হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কম্পিউটার কোর্স-৩১০-এর খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান।
পরীক্ষার খাতায় নম্বর বেশি দেওয়ার নাম করে হিসাববিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রীকে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন। পরে ওই ছাত্রী বিষয়টি বিভাগের সভাপতি এবং অন্য শিক্ষকদের জানালে বিভাগ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির নামমাত্র সুপারিশে শিক্ষক কাজী জাহিদকে সংশ্লিষ্ট কোর্স থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
২০১০ সালে ফোকলোর বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে। পরীক্ষার খাতায় নম্বর বেশি পাইয়ে দেওয়া এবং বিয়ে করার কথা বলে অনার্স শেষ বর্ষের এক ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন এক শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরি ভবনে একই ছাদের নিচে দীর্ঘদিন রাত কাটিয়ে শেষ বেলায় ওই শিক্ষক সব সম্পর্ক অস্বীকার করেন। পরে সম্পর্কের দাবি নিয়ে বিষয়টি ভুক্তভোগী ছাত্রী তার সহপাঠীদের জানালে উল্টো ওই ছাত্রীকেই নানা ধরনের হুমকি দেওয়া হয়। প্রাণ ভয়ে ছাত্রী তার সব অভিযোগ গোপন করতে বাধ্য হন।
২০১১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ (আইবিএস)-এর সচিব এসএম গোলাম নবীর বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে। ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিচ্ছু এক ছাত্রী তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলেন। এ ঘটনায় নগরীর মতিহার থানায় ওই সময় ভুক্তভোগী ছাত্রী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
ওই বছরেরই ১৭ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও সংগীত বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক অমিতাভ চ্যাটার্জির বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে। অভিযোগকারী ছাত্রীকে ওই শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে নানাভাবে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীকে সংগীত চর্চার নাম করে অমিতাভ চ্যাটার্জি শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন ক্ষতিগ্রস্ত করার হুমকিও দেন তিনি। শিক্ষক অমিতাভ চ্যাটার্জির বিরুদ্ধে অন্য ছাত্রীরাও যৌন হয়রানির নানা অভিযোগ তোলেন।
হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রতিটি থানা শহরে একটি করে যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল থাকার কথা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও ২০১০ সালে মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কেয়াকে প্রধান করে এই সেল গঠন করা হয়। বিভিন্ন কারণে এই সেলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়। যার ফলে অনেক শিক্ষার্থী তাদের অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দেওয়ার পর তারা ন্যায্য বিচার পাননি বলে অনেকের কাছ থেকে জানা গেছে।
তবে নানা সমালোচনার মুখে রবিবার সিন্ডিকেট সভায় যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ নীতিমালা-২০১০ এর আলোকে সাত সদস্যের কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। এতে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিনা পারভীনকে সভাপতি ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফেরদৌসী সহলকে সদস্য সচিব করা হয়।
ছাত্রীদের যৌন হয়রানি বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ড. মিজানুর রহমান বলেন, রাবি প্রশাসন সব সময় ছাত্রী লাঞ্চনার বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা এতোদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের যেখানেই অভিযোগ দিয়েছে, তার সঠিক তদন্ত করা হয়েছে। যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল পূর্নগঠিত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা আরো বেশি সুবিধা পাবে বলে মনে করেন ছাত্র উপদেষ্টা।