ছাত্রলীগ নেত্রী এশাকে হেনস্তায় কারণ দর্শানোর নোটিস
প্রকাশ : ২০ মে ২০১৮, ১৩:১৪
কোটা সংস্কারের আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলে ছাত্রলীগ সভাপতি ইফফাত জাহান এশাকে হেনস্তা ও রগ কাটার ভুয়া খবর ফেসবুকে ছড়ানোর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২৫ ছাত্রীকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এতে বলা হয়েছে, “বিগত ১০ এপ্রিল মঙ্গলবার মধ্যরাতে আপনি কবি সুফিয়া কামাল হলের আবাসিক ছাত্রীদের মধ্যে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা অসত্য রটনা ও গুজব ছড়িয়েছেন যে, উক্ত হলের আবাসিক ছাত্রী ইফফাত জাহান ইশা, মোর্শেদা আক্তার নামক একজন আবাসিক ছাত্রীর রগ কেটে দিয়েছে এবং তাকে মারধর করেছে।
আপনি অন্যান্য আবাসিক ছাত্রীদের মধ্যে বিভ্রান্তিকর সংবাদ পরিবেশন করেছেন ও তার আলোকচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন। আপনার এ ধরনের পূর্বপরিকল্পনা, ষড়যন্ত্র ও প্রচারণা হলের ছাত্রীদের ভীষণভাবে উত্তেজিত ও আতঙ্কিত করে। তাছাড়া আপনি পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে সংঘবদ্ধ হয়ে ইফফাত জাহান ইশাকে মারধর ও লাঞ্ছিত করেন এবং জোরপূর্বক ইফফাত জাহান ইশার গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেন এবং তার বস্ত্র হরণ করেন।
“ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলে সংঘটিত উক্ত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটি ঘটনার সাথে আপনার জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে। একজন শিক্ষার্থী কর্তৃক এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত কার্যকলাপ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ও মর্যাদাকে ভীষণভাবে ক্ষুণ্ণ করেছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ও আইনের সুস্পষ্ট পরিপন্থি।”
গত ১৮ এপ্রিল শৃঙ্খলা পরিষদের সুপারিশ ও ৩০ এপ্রিলের সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ ঘটনায় ওই ছাত্রীদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তার কারণ চিঠি পাওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রক্টরের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো জবাব না পাওয়া গেলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপনার বিরুদ্ধে একতরফাভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে,” বলা হয়েছে এতে।
কারণ দর্শানোর এই নোটিস ছাত্রীদের হলের ঠিকানা, বিভাগের ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে বলে সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিতা রেজওয়ানা রহমান জানিয়েছেন।
এ নোটিশ পেয়ে ছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেয়া একাধিক ছাত্রী বলেন, আমরা হল ছাত্রলীগ সভাপতি এশার লাঞ্ছনার সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। তারপরও তালিকায় আমাদের নাম দেওয়া হয়েছে। হল থেকেও নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। সেটার উত্তর দিয়েছি। এখন আবার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া হয়েছে। এতে আমরা নতুন করে হয়রানির আশঙ্কা করছি।
কয়েকজন অভিযোগ করেন, এশাকে বাঁচাতে সেদিন এগিয়ে গিয়েছিলেন এবং মার খেয়েছেন অথচ লিস্টে তাদের নাম রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে দর্শন বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্রী ও সুফিয়া কামাল হল ছাত্রলীগের সভাপতি ইফফাত জাহান এশা বলেন, আপনারা তো মোর্শেদার ভিডিও দেখেছেন। আমার নামে তারা গুজব রটিয়েছিল। আমার যা হয়েছে, তা অন্যায় হয়েছে। আমি জাস্ট বিচার চাই, সুষ্ঠু বিচার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী বলেন, তাদের বক্তব্য জানার জন্য এ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রক্রিয়া। কাউকে হয়রানি করা হবে না।