লালমনিরহাট চরাঞ্চলে সবজিচাষে বিপ্লব
প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০১৭, ১১:৪৭
শীতকালীন সবজিচাষে লালমনিরহাটসহ উওর ৮ জেলার চরাঞ্চলে বিপ্লব ঘটেছে। চরের সবজি এখন ৫০টির বেশী দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এই রপ্তানি হতে বছরে প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা আয় হচ্ছে। অর্থকারি সফল হিসেবে সবজি চাষ করে কৃষক লাভের মুখ দেখছে। তাই শিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত তরুণরাও সবজি চাষে ঝুকে পড়েছে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও)’ র তথ্য মতে, গত চল্লিশ বছরে বাংলাদেশে সবজি চাষের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৬ গুন। বেড়েছে জমির পরিমানও। গত একদশকে সবজি চাষের পরিমান বেড়েছে ৭ শতাংশ হারে। ২০১৬- ২০১৭ অর্থ বছরে রবি মৌসুমে ৫ দশমিক ২৮ লাখ হেক্টর জমিতে সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়ে ছিল। কিন্তু গত বছর এই জমির পরিমান ছিল ৫ দশমিক ১০ লাখ হেক্টর। কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাবে ২০১৩- ২০১৪ সালে দেশে এক কোটি ৩৯ লাখ টন সবজি উৎপাদন হয়। তিন বছরে সবজি উৎপাদন বৃদ্ধির হার প্রায় ৬ শতাংশ।
এ অঞ্চলে তামাকের পরিবর্তে অর্থকরী কৃষি ফসল হিসেবে সবজি চাষের দিকে কৃষক ঝুকছে। বিশেষ করে তরুণ কৃষকরা বেশী সবজি চাষে মনোযোগ দিয়েছে। সবজি চাষে জমির পরিমানও ব্যাপক হারে বেড়েছে। বিশেষ করে উত্তরের বড়বড় নদী ধরলা, তিস্তা, সানিয়াজান, করতোয়ায় এখন বছরের নয় মাস পানি থাকে না। জেগে উঠেছে বিশাল বিশাল বালুচর। ওই সব চরে সেচের সুবিধা সৃষ্টি করে লাগসই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ৯ মাস নানা জাতের সবজিসহ ফসল ফলাচ্ছে কৃষক। তিস্তা, ধরলা, সানিয়াজান ও রত্নাই নদীর চরে কৃষক আলু, টমেট, মুলা, ফুলকপি, বাঁধা কপি, পেঁপে, লাউ, মাটিয়া কুমড়া (মিষ্টি জাতের কুমড়া), ধান, পাট, ধনিয়া, পিঁয়াজ, মরিচ, সরিষা, ভুট্রাসহ নানা ফসল ফলাচ্ছে।
চরাঞ্চলে সবজি চাষ লালমনিরহাট জেলায় ব্যান্ডিংয়ের মাত্রা পেয়েছে। এমন কোন চর নেই যেখানে সবজি চাষ হচ্ছে না। চরাঞ্চল গুলো একেকটি ছোট ছোট খাদ্যভান্ডারে পরিনত হয়েছে। তবে সবজি চাষের অগ্রগতির সাথে সাথে সবজি বাজারজাত করান, বিপন ও সংরক্ষনের তেমন কোন অগ্রগতি হয়নি। এখনো পর্যন্ত কৃষকের চেয়ে ফড়িয়া ব্যবসায়িরা সবজিতে বেশী লাভবান হচ্ছে।
লালমনিরহাট কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিদু ভুষন রায় জানান, চরাঞ্চলে কৃষিতে বিপ্লব ঘটছে। চরাঞ্চলের মানুষজন এখন অর্থনীতিক ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। সে দিন বেশী দূরে নয়, চরাঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নতের কাছাকাছি চলে যাবে।