আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির পর এবারই প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা
প্রকাশ : ১৪ এপ্রিল ২০১৭, ১৩:৩৯
বাঙালির ঐতিহ্যের ধারক পহেলা বৈশাখ এক আনন্দময় দিন। এই দিনটিকে বাঙালি নানা অনুষঙ্গে বরণ করে নেয়। এর একটি হচ্ছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। রাজধানীতে ১৯৮৯ সালে শুরু হওয়া সেই শোভাযাত্রায় প্রতিবছর মিলে যায় সব বয়সের ও সব ধর্ম বর্ণের নানা পেশার মানুষ।
ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টিকারী অসাম্প্রদায়িক চেতনার এই মঙ্গল শোভাযাত্রা এবার জাতিসংঘের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউনেস্কোর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে, তাই এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হবে আরও রঙিন ও ভিন্ন আবহে।
বাঙালি সংস্কৃতির এক চিরসবুজ ঐতিহ্য বর্ষবরণ। পহেলা বৈশাখে দেশের গ্রামে গ্রামে বৈশাখী মেলার আয়োজন এক অন্যরকম আনন্দ। বাঙালি এই ঐতিহ্য ধরে রেখেছে বছরের পর বছর। গ্রামের বৈশাখী মেলা থেকে এই আয়োজন ভিন্ন রূপে চলে আসে শহরে।
জানা যায়, মঙ্গল শোভাযাত্রা প্রথম শুরু যশোরের ‘চারুপীঠ’ নামের এক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে। সেই যাত্রায় যশোরবাসী টানা দুই-আড়াই ঘণ্টা দল বেঁধে নেচে গেয়ে ছুটে বেড়িয়েছিল। এরপর প্রতিবছর একই আনন্দ যাত্রা। সেই আনন্দ শোভাযাত্রার জোয়ার যশোর ছাড়িয়ে চলে এলো ঢাকায়। তিন বছর পর একই উদ্দেশ্যে, একই ঢংয়ে, একই নামে শোভাযাত্রা শুরু হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে।
১৯৮৯ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ আয়োজন করছে আনন্দ যাত্রা। প্রতি বছরের প্রথম দিন ফেলে আসা বছরের সব গ্লানিকে মুছে ফেলার প্রত্যয় নিয়ে শুরু হয় দিনটি। ব্যর্থতা আর হতাশা, সব বিভেদকে দূর করার দৃঢ় ইচ্ছা নিয়ে স্বাগত জানায় বাঙালি। দশম বছরে (১৯৯৬) আনন্দ শোভাযাত্রাটি নাম নিল ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’।
সর্বশেষ ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর জাতিসংঘের এই সংস্থা ইউনেস্কো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়। ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় শেষ হওয়া ইউনেসকোর ‘স্পর্শাতীত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবিষয়ক আন্তঃরাষ্ট্রীয় কমিটির (ইন্টার গভর্নমেন্টাল কমিটি অন ইনট্যানজিবল হেরিটেজ) ১১তম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।