আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি: হাসিনা খাতুন
প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০১৬, ১৫:০৬
চট্টগ্রামের কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন আহমেদ ও হাজারি লেইনের বাসিন্দা টুনটু সেন এবং রঞ্জিত দাশকে অপহরণের পর নির্মমভাবে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত মীর কাসেমের রিভিউ খারিজ ও মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্যদানকারীরা।
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) রায় ঘোষণার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমের মামাতো বোন ও সাক্ষ্যদানকারী হাসিনা খাতুন বলেন, ‘আমি খুবই আনন্দিত। ৪৬ বছর ধরে বুকে পাথর বেঁধে রেখেছি। মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর হলে এ পাথর নেমে যাবে। সঠিক বিচার হয়েছে। আমি মনে করি আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি। অবশ্যই ন্যায়বিচার পেয়েছি।’
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসি বহাল রাখার রায়ে এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানান ট্রাইব্যুনালে গিয়ে সাক্ষ্য দেওয়া হাসিনা খাতুন।
মূলত চট্টগ্রামের কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন আহমেদকে নির্যাতনের পর খুনের দায়েই জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলানোর রায় বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
এ মামলায় মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে গিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন জসিম উদ্দিনের মামাতো বোন হাসিনা খাতুন।
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) সকালে ফাঁসি বহালের রায়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘জসিম একজন মায়ের সন্তান ছিল। তাকে অকথ্য নির্যাতন করে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। ৪৬ বছর ধরে বুকে পাথর বেঁধে রেখেছি। মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর হলে এ পাথর নেমে যাবে। আমি খুবই আনন্দিত।’
একাত্তরে মীর কাসেমের নির্দেশেই চট্টগ্রাম টেলিগ্রাফ অফিস সংলগ্ন এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্রী রঞ্জন নাথের মালিকানাধীন মহামায়া ভবন দখল করে নাম দেওয়া হয় ডালিম হোটেল। সেখানে গড়ে তোলা হয় বদর বাহিনী চট্টগ্রাম অঞ্চলের ঘাঁটি এবং বন্দিশিবির। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে জসিমকে অপহরণের পর এই ডালিম হোটেলে নিয়েই নির্যাতন ও হত্যা করা হয়।
২০১৪ সালের ২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমসহ মোট আটজনকে হত্যার দায়ে মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ এসেছিল। ২০১৬ সালের ৮ মার্চ আপিল বিভাগ জসিমকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে। এছাড়া আরও বিভিন্ন অভিযোগে পৃথকভাবে মোট ৫৮ বছরের কারাদণ্ড দেয়।
ফাঁসির রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে তার রিভিউ আবেদন খারিজ করে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ ৩০ আগস্ট (মঙ্গলবার) সকালে মীর কাসেমের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার চূড়ান্ত এ রায় ঘোষণা করেন।