দিনাজপুরে নারী সাংবাদিক লাঞ্ছনার অভিযোগ
প্রকাশ : ২৮ জুন ২০১৬, ১৫:৩৪
দিনাজপুরে এক নারী সাংবাদিককে প্রকাশে লাঞ্ছিত করেছে শ্রমিক নেতা নামধারী সন্ত্রাসীরা। এর প্রতিবাদ করায় উল্টো ঐ নারী সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাকে ও তার মাকে ঘরে আটকিয়ে রেখে মারধর করা ছাড়াও জবাই করার হুমকি দিয়েছেন ওই সন্ত্রাসীরা। ঘটনাটি ঘটেছে, সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় দিনাজপুরের নিমনগর ফুলবাড়ী বাসষ্ট্যান্ডে সোনালী ব্যাংক শেখপুরা শাখার নিচ তলায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, প্রতি মাসের মত অসুস্থ মায়ের পেনশনের টাকা তোলার জন্য মা আনোয়ারা বেগমকে সাথে নিয়ে ব্যাংকে যায় জিটিভির দিনাজপুর প্রতিনিধি তনুজা শারমিন তনু। কিডনির অপারেশন করার কারনে তার মা সিঁড়ি বেয়ে উঠানামা করতে না পারায় মা আনোয়ারা বেগমকে সোনালী ব্যাংকের নিচ তলায় ঔষধ ও একটি সেলুনের দোকানের পাশে বসিয়ে রেখে সাংবাদিক তনুজা ব্যাংকের উপরে উঠে। ব্যাংকের কাগজ হাতে পাবার পর মার স্বাক্ষর নেয়ার জন্য ব্যাংকের নিচে এসে দাঁড়ালে পিছন থেকে তার পিঠে সজোরে বেশ কয়েকবার থাপ্পর মারে সেখানকার এক পরিবহন শ্রমিক নেতা সাইফুর রাজ চৌধুরী। পেছনে তাকাতেই সাইফুর রাজ নারী সাংবাদিকটিকে সরে যেতে বলে সেলুনের আয়নায় নিজের মুখ দেখে আবার ফিরে আসেন।
এরপর ওই নারী সাংবাদিক এর প্রতিবাদ করে জানান, “আপনি কি বোবা কথা বলতে পারেন না, সরে যাওয়ার জন্য? আপনি কেন আমাকে এভাবে ছুঁয়ে সরে যেতে বললেন?” এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ওই শ্রমিক নেতা নামধারী সন্ত্রাসী সাইফুল রাজ। এ সময় এগিয়ে আসে তার সহযোগি আব্দুল করিম রাঙ্গা ও তার ছেলে রাজু। তারা উল্টো এসে ওই নারী সাংবাদিকের শরীরে হাত তুলে মারধর করে। কেড়ে নেয় তার গলায় থাকা সোনার চেইন। এসময় সাংবাদিক তনুজা চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে প্রতিবাদ করলে তারা মিথ্যা অপপ্রচার চালাতে শুরু করে। বলে, ভুয়া সাংবাদিক, এরা দেহ ব্যবসা করে সাইফুর রাজের কাছে ৩ লাখ টাকা দাবী করছে। এই টাকা সাইফুল রাজ দিতে না চাওয়ায় সাংবাদিক তনু ও তার মা ঝামেলা করছে। এমন অপপ্রচার চালাতে চালাতে আবারও সাংবাদিক তনুজার উপর তারা হামলা করে। তনুজা ও তার বৃদ্ধা অসুস্থ মাতা পাশের সেলুনের ভেতরে আশ্রয় নিলে তারা সাংবাদিক তনুজা ও তার মাকে শাটার ফেলে আটকে রাখে ওই সেলুনে। পরে সাংবাদিক তনুজা মোবাইল ফোনে থানায় খবর দিলে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় সাংবাদিক তনুজা শারমিন তনু দিনাজপুর কোতয়ালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু ঘটনার ২৪ ঘন্টা পার হলেও পুলিশ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
এ নিয়ে দিনাজপুরে সাংবাদিক ও সুশীল সমাজে প্রতিবাদ এবং নিন্দার ঝড় বইছে। তারা অবিলম্বে শ্রমিক নামধারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এর কঠোর বিচারের দাবী করেছেন দিনাজপুরে সাংবাদিক ও সুশীল সমাজ।