শ্যালিকাকে হত্যার অভিযোগ
প্রকাশ : ২৪ মে ২০১৭, ১৫:১২
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ছুরিকাঘাত করে শ্যালিকাকে হত্যার পর স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে আহত করার অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। পরে ওই ব্যক্তি আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন বলে জানিয়েছেন স্বজনেরা। পরে গ্রামবাসী ওই ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
২৩ মে (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের পাবই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আটক ব্যক্তির নাম মো. সালাউদ্দীন (৩২)। তিনি একই জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া গ্রামের মো. আলাউদ্দীনের ছেলে।
নিহত শ্যালিকার নাম মণি বেগম (১৬)। সে পাবই গ্রামের মৃত মছলু মিয়ার ছোট মেয়ে।
হতাহতদের স্বজনদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বছর খানেক আগে মৃত মছলু মিয়ার বড় মেয়ে রায়না বেগমকে (২২) বিয়ে করেন সালাউদ্দীন। এটি তার দ্বিতীয় বিয়ে। এ দম্পতির ছয় মাস বয়সী মাসুম নামে এক পুত্র সন্তান রয়েছে। কয়েক দিন আগে পারিবারিক কলহের জের ধরে রায়না বেগম শিশুপুত্রকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসেন। ২২ মে (সোমবার) সন্ধ্যায় সালাউদ্দীন নিজে আসেন স্ত্রীকে বাড়ি ফিরিয়ে নিতে। রাতে শ্বশুর বাড়িতে থেকে ২৩ (মঙ্গলবার) সকালে স্ত্রী-সন্তানকে তার সঙ্গে বাড়ি ফিরতে বলেন সালাউদ্দীন। স্ত্রী রায়না এতে রাজি না হওয়ায় দুজনের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। ওই সময় শ্যালিকা মণি নিজেও এই ঝগড়ায় অংশ নেয়। একপর্যায়ে স্বামী সালাউদ্দীন হাতে থাকা ছুরি দিয়ে মণিকে উপর্যুপরি আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ছুরির আঘাতে আহত হন স্ত্রী রায়না ও সন্তান মাসুম। আশপাশের লোকজন তখন ‘ধর ধর’ বলে চিৎকার করলে সালাউদ্দীন বাড়ির উঠান থেকে দৌড়ে আরেক কক্ষে ঢুকতে গিয়ে দরজার চৌকাঠে ধাক্কা খায়। এতে তাঁর মাথা ফেটে যায়। পরে তাকে লোকজন ধরতে গেলে তিনি মুখের ভেতর তরল জাতীয় কিছু ঢেলে দেন। ওই অবস্থায় লোকজন তাকে ধরে পুলিশে খবর দেয়।
রায়নার বড় ভাই মজিদ মিয়া অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে তার বোনকে মারধরসহ নির্যাতন করা হতো। এ ঘটনায় এক সপ্তাহ আগে তিনি বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। ২৩ মে (মঙ্গলবার) সকালে বোনের স্বামী সালাউদ্দীন তাকে বাড়ি ফিরে যেতে বললে তারা বাধা দেন। ওই সময় ক্ষিপ্ত হয়ে সালাউদ্দীন ছুরি দিয়ে আঘাত করে মণিকে হত্যা করে এবং রায়না ও শিশুপুত্র মাসুমকে আহত করে। পরে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। রায়না ও মাসুমকে প্রথমে কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামছুদ্দোহা জানান, থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাব্বির আহমদ ঘটনাস্থলে গিয়ে সালাউদ্দীনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান।