স্পিকারের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদল প্রধানগণের সাক্ষাৎ
প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০১৭, ০০:১২
জাতীয় সংসদের স্পিকার, সিপিএ নির্বাহী কমিটির চেয়ারপার্সন ও ১৩৬তম আইপিইউ এসেম্বলির সভাপতি ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সাথে ১৩৬তম আইপিইউ এসেম্বলিতে আগত বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদলের প্রধানগণ ৪ এপ্রিল (মঙ্গলবার) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেছেন।
সাক্ষাৎকারী প্রতিনিধিদলের প্রধানরা হচ্ছেন-ভুটান, ইরাক, মেক্সিকো, কানাডা, জর্জিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও চীনের।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ভুটান খুবই শান্তি প্রিয় একটি দেশ। বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে বিদ্যমান দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক আরো এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ আগ্রহী। দ্বি-পাক্ষিক ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।
ভুটানের ন্যাশনাল পার্লামেন্টের চেয়ারম্যান ও প্রতিনিধিদলের প্রধান সোনাম নিনগা সাক্ষাৎকালে বলেন, ভুটান ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ভুটান ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন দান ও পরবর্তীতে দ্বিতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন।
স্পীকার বলেন, বাংলাদেশের ন্যায় ইরাকের অধিকাংশ জনগণ মুসলিম। সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুশাসনের সাথেও যথেষ্ট মিল রয়েছে। এর ফলে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন আরো গতি পাবে। সন্ত্রাসের বিপক্ষে বাংলাদেশের জিরো টলারেন্সের কথা উল্লেখ করে স্পিকার আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের রোল মডেল।
ইরাকের ফরেন রিলেশন কমিটির সিনিয়র অ্যাডভাইজার ও প্রতিনিধিদলের প্রধান আব্বাস আল আনবরী বলেন, বাংলাদেশের সাথে ইরাকের দ্বি-পাক্ষিক সর্ম্পক অত্যন্ত সুদৃঢ়। তিনি ইরাকের বর্তমান পরিস্থিতি সন্তোষজনক জানিয়ে সেখানে কর্মী প্রেরণের আহবান জানান।
মেক্সিকোর ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির চেয়ারপার্সন ও প্রতিনিধিদলের প্রধান গ্যাবরিয়েলা কুয়েভাস ব্যারন সফলভাবে ১৩৬তম আইপিইউ এসেম্বলি আয়োজন করায় স্পিকারকে ধন্যবাদ জানান।
স্পীকার প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, মেক্সিকোর সাথে বাংলাদেশের ভ্রাতৃত্ববন্ধন দীর্ঘদিনের। ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের মাধ্যমে এ বন্ধন ভবিষ্যতে আরো শক্তিশালী হবে।
তিনি আরও বলেন, কানাডার সাথে বাংলাদেশের গভীর সুসম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী কানাডায় লেখাপড়া করার পাশাপাশি সে দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছে, যা কানাডার আর্থ-সামাজিক খাতে ভূমিকা রাখছে। স্পিকার বলেন, বাংলাদেশ অত্যন্ত সফলতার সাথে ১৩৬তম আইপিইউ এসেম্বলি আয়োজন করতে পেরেছে। আগামী নভেম্বরে কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এসোসিয়েশন (সিপিএ) সম্মেলন আয়োজনেরও উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
কানাডার সিনেটর ও প্রতিনিধিদলের প্রধান সালমা আতাউলাজান বলেন, আইপিইউ এর আয়োজনের অভিজ্ঞতা কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এসোসিয়েশন (সিপিএ) সম্মেলন আয়োজনে কাজে লাগবে। তিনি বলেন, আইপিইউ’র এ আয়োজন দেশের জন্য একটি মাইলফলক।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফেডারেল ন্যাশনাল কাউন্সিলের স্পিকার ড. আমাল আবদুল্লাহ আল কুবাইসীকে সে দেশের প্রথম নারী স্পিকার নির্বাচিত হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, তাঁর এ পদে নির্বাচিত হওয়া নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফেডারেল ন্যাশনাল কাইন্সিলের স্পীকার ও প্রতিনিধিদলের প্রধান আরও বলেন, বাংলাদেশের সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দ্বি-পাক্ষিক সর্ম্পক অত্যন্ত সুদৃঢ়।
স্পিকার বলেন, জর্জিয়ার সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ব্যবসা বাণিজ্য বৃদ্ধির মাধ্যমে এ সম্পর্ককে আরো জোরদার করতে চায়।
জর্জিয়ার পার্লামেন্টের চেয়ারম্যান ও প্রতিনিধিদলের প্রধান ইরাকলি কোবাখিদজি বলেন, বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জর্জিয়া এ দেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন ও ব্যবসা বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে আগ্রহী।
চীন বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু রাষ্ট্র এবং অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার উল্লেখ করে এসময় স্পিকার বলেন, বাংলাদেশে চীনের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ রয়েছে।
তিনি বলেন, যে কোন সময়ের চেয়ে দু’দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ। এ সময় স্পিকার তাঁর চীন সফরের কথা স্মরণ করেন এবং এ ধারাবাহিকতায় চীনের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশে সফর করায় সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
চীনের ন্যাশনাল কংগ্রেসের স্টান্ডিং কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রতিনিধিদলের প্রধান চেন সানঝি বলেন, বাংলাদেশের সাথে চীনের দ্বি-পাক্ষিক সর্ম্পক অত্যন্ত সুদৃঢ়। তিনি তরুণ ও নারী সংসদ সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক মতবিমিয়ের মাধ্যমে লব্ধ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দু’দেশের সংসদীয় চর্চাকে সমৃদ্ধ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভুটান, ইরাক, মেক্সিকো, কানাডা, জর্জিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও চীনের বিনিয়োগকারীদের পাটজাত দ্রব্য, ঔষধ, তৈরি পোষাক শিল্প, বিদ্যুৎ, নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ, জ্বালানী, জাহাজ নির্মাণ শিল্প ও চামড়া শিল্পে বিনিয়োগের আহবান জানান।
সাক্ষাৎকালে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: বাসস