অভিযোগ পেয়েও ব্যবস্থা নেয়নি থানা
ধর্ষণের বিচার সালিসে
প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০১৭, ১৯:১৯
প্রথম শ্রেণি পড়ুয়া মাত্র ৭ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের বিচার সালিসে নিষ্পত্তি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিচারের পর ১৭ দিন পার হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেয়েও ময়মনসিংহের নান্দাইল থানা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। প্রচলিত আইন অনুযায়ী, ধর্ষণের মতো অপরাধ সালিসে নিষ্পত্তিযোগ্য নয়।
গত ১৭ মার্চ এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত মাসুম মিয়ার (১৮) এলাকার ফজলুর রহমানের ছেলে।
মেয়েটি জানায়, ঘটনার দিন সকালে একটি বসতঘরে নিয়ে তাকে নির্যাতন করে ওই যুবক। সে চিৎকার করলে যুবক জানালা দিয়ে পালিয়ে যায়।
মেয়ের মা জানান, আহত মেয়েকে উদ্ধার করে ঘরে এনে দেখতে পান শিশুটির স্পর্শকাতর অঙ্গে ক্ষত হয়েছে। সে অচেতন হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। এ ঘটনায় বিচার চাইলে যুবকের পরিবারের লোকজন উল্টো তাঁদের বাড়িতে হামলা চালায়। মেয়ের খালার (২০) মাথা ফাটিয়ে দেয় যুবকের বড় ভাই জাহাঙ্গীর। বাড়ির অন্য মেয়েদের মারধর করে।
মেয়ের দাদা জানান, যৌন নিপীড়ন ও মারধরের কথা উল্লেখ করে তিন দিন পর তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পুলিশ শুধু মারামারির অভিযোগ নেয়। কিন্তু সেটারও তদন্ত করে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
ধর্ষণের বিচার সালিসে নিষ্পত্তি করার সময় উপস্থিত মোস্তফা কামাল জানান, ‘আবদুল হকের বাড়ির আঙিনায় সালিস বসানো হয়েছিল। সেখানে মুশুলি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ইফতিকার উদ্দিন ভূঁইয়া বিপ্লবসহ গ্রামের কিছু মাতবর উপস্থিত ছিলেন। অভিযুক্ত যুবক সালিসে যৌন নিপীড়ন করার অপরাধ স্বীকার করে নেয়। শাস্তিস্বরূপ তাকে সাতটি জুতার বাড়ি, যৌন নিপীড়নের লিখিত স্বীকারোক্তি ও দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ’
অভিযুক্ত মাসুদকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তাঁর বড় ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন সালিসের সত্যতা স্বীকার করে বলে, ‘টিউবওয়েলের ড্রেনের পানি নিয়ে শিশুটির পরিবারের মধ্যে ঝগড়া হয়। এতে কিছু মারামারি হয়েছে। ’
তদন্ত কর্মকর্তা ও নান্দাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নুরুল হুদা বলেন, ‘তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। ’ আইনি ব্যবস্থা নেননি কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তখন অভিযোগে ধর্ষণের কথা বলা হয়নি। এখন আলাদা অভিযোগ দিলে দুটি ঘটনারই মামলা নেওয়া হবে। ’
নান্দাইল থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, ‘এ রকম ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই মামলা নেওয়া হবে। ’