অ্যাসিড ছুঁড়ে হত্যাচেষ্টা, আমৃত্যু কারাদণ্ড
প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৮:২৯
অ্যাসিড ছুঁড়ে স্ত্রীকে হত্যাচেষ্টার মামলায় স্বামীসহ তিনজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত স্বামীকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা দেয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন।
আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন স্বামী সুরুজ আলম, সুরুজ আলমের সহযোগী শফিউল ইসলাম ও সেলিম হাওলাদার। রায় ঘোষণার পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
রবিবার ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এস এম কুদ্দুস জামান এই রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে বলা হয়, নির্যাতিত স্ত্রী মাহফুজা আকতারকে বিয়ে করার পর আসামি সুরুজ আলম আরও দুটি বিয়ে করেছেন। মাহফুজা আকতার পোশাকশ্রমিক ছিলেন। সুরুজ তাকে চাকরি ছাড়তে বলেন। কিন্তু স্ত্রী তাতে রাজি হননি। এরপর সুরুজ স্ত্রীকে অ্যাসিড ছোড়ার পরিকল্পনা করেন। গত বছরের ৭ এপ্রিল সুরুজ পূর্বপরিকল্পিতভাবে তার দুই সহযোগীকে বাসায় নিয়ে যান। সুরুজ আলমের নির্দেশে সহযোগীরা মাহফুজাকে অ্যাসিড নিক্ষেপ করে। এতে তার মুখ, বাঁ চোখ ও শরীরের বাঁ দিকের একাংশ দগ্ধ হয়। স্ত্রীকে ছোড়া অ্যাসিডে তাঁদের নয় বছরের শিশুও দগ্ধ হয়। এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অ্যাসিড-সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ আইনের ৫(ক) ধারার অপরাধ প্রমাণে সক্ষম হয়েছেন। আইনের ৭ ধারা অনুসারে অপরাধে সহায়তাকারীর একই শাস্তি পাওয়ার বিধান রয়েছে। তাই প্রত্যেক আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হলো।
তবে রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আনোয়ার উল্যা বলেন, আদালত যে রায় দিয়েছেন, তাতে তিনি ক্ষুব্ধ। আইনে আছে, অ্যাসিড-সন্ত্রাসের শিকার হয়ে কেউ কোনো অঙ্গ হারালে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু আদালত দিয়েছেন যাবজ্জীবন। রায়ের কপি পাওয়ার পর উচ্চ আদালতে যাবেন কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষকে সহায়তা করে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সংস্থা।
সংস্থার নির্বাহী পরিচালক সালমা আলী রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, "একজন মানবাধিকারকর্মী হিসেবে আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আশা করেছিলাম। তা হয়েছে"।