‘নারীরা নিজের ইচ্ছায় নয়, স্বামীর প্ররোচনায় জঙ্গিবাদে’

প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৭:৫৮

জাগরণীয়া ডেস্ক

রাজধানীর দক্ষিণখানের আশকোনায় ‘সূর্য ভিলা’ নামে জঙ্গি আস্তানায় আত্মসমর্পণকারী দুই নারী স্বামীর প্ররোচনায় জঙ্গিবাদে এসেছেন বলে জানিয়েছেন কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।

২৭ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল এ কথা বলেন।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আটক দুই নারীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ থেকে কিছু তথ্য জানা যায়। অস্ত্র, গোলাবারুদ ও অর্থ কোথায় থেকে এসেছে সে বিষয়ে আত্মসমর্পণকারীরা কিছু ভাসা ভাসা তথ্য দিয়েছে। আশকোনার বাসায় কারা আসত, তাদের কিছু সাংগঠনিক নাম পাওয়া গেছে। এদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে।  ওই বাসাটি মূলত অফিস কাম বাসা হিসেবে ব্যবহার করত জঙ্গিরা। জঙ্গি মুসা সাংগঠনিক কাজে সব সময়ই বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াত। তবে ওই বাসায় মাঝেমধ্যে আসত। আর নারী জঙ্গিরা নিজেদের ইচ্ছায় কেউ এই পথে এসেছে বলে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে তারা অনেকেই স্বামীর প্ররোচনায় এই পথে আসতে বাধ্য হয়েছিল।’

পুলিশ জানায়, তানভীর কাদেরের স্ত্রী স্বামীর প্ররোচনায় জঙ্গিবাদে এসেছে। এ ছাড়া জঙ্গি মারজানের স্ত্রী জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তাকেও তার স্বামী জঙ্গিবাদে আসতে বাধ্য করেছে। নারীরা নিজের ইচ্ছায় নয়, বরং স্বামীর প্ররোচনা এবং আশ্রয় পেতেই জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছে।

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সূর্য ভিলায় জঙ্গি আস্তানায় আত্মঘাতী ওই নারী ছিল অনেক হতাশাগ্রস্ত। আগের স্বামী মারা যাওয়ার পর জঙ্গি সুমনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। এর পর তিনিও জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েন। আর মূলত হতাশার কারণেই তিনি আত্মঘাতী হামলার জন্য রাজি হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।’ তিনি জানান, দক্ষিণখানের আশকোনার জঙ্গি আস্তানায় অস্ত্র ও গ্রেনেড কেন মজুদ করা ছিল, তা জানার জন্য দুই নারী জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এসব অস্ত্র কোথা থেকে এসেছে আর তাদের কী পরিকল্পনা ছিল, তা জঙ্গি মুসাকে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত বলা সম্ভব হবে না। তাদের আত্মঘাতী হামলা চালানোর পোশাক (সুইসাইডাল ভেস্ট) ও গ্রেনেডগুলো যেভাবে প্রস্তুত করা ছিল, তাতে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বড়দিন উপলক্ষে তাদের হামলার পরিকল্পনা ছিল।’

রাজধানীর দক্ষিণখানের আশকোনায় গত শুক্রবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায় কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট। এ সময় দুজন নিহত হয় এবং শিশুসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

0Shares
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত