নারী নির্যাতন মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৩:৩৩
সাতক্ষীরায় নারী নির্যাতন ও আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাত ১১টায় চেয়ারম্যান মনিরুলকে তাঁর দুই সহযোগী চৌকিদার ইসলাম ও জয়কে গ্রেপ্তার করা হয়।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদ শেখ জানান, তিনজনকে সাতক্ষীরা সদর থানাহাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রবিবার (১১ ডিসেম্বর) তাঁদের আদালতে তোলা হবে। এ ছাড়া চেয়ারম্যানের নির্যাতন ও প্ররোচনায় আত্মহত্যাকারী নারী আফরোজা খাতুনের (১৬) লাশের ময়নাতদন্ত এই দিনে সম্পন্ন হবে বলে জানান তিনি।
সোনাবাড়িয়া গ্রামের আফরোজা খাতুনের পরিবারের সদস্যরা জানান, আফরোজা খাতুন নিজ বাড়িতে দর্জির কাজ করতেন। গত শুক্রবার দুপুরে কাজের ফাঁকে বাড়ির পাশে হাসানের দোকানে মোবাইল ফোনে রিচার্জ করতে যান। তাঁরা জানান, এ সময় পলাশ নামের এক যুবক হাসানের কাছে তার পাওনা টাকা নিতে আসার সঙ্গে সঙ্গে আফরোজা ও পলাশকে একটি ঘরে ঢুকিয়ে দেয় হাসান ও তার বন্ধু হাফিজ। এ সময় তারা বাইরে থেকে দরজা আটকে দেয়।পরে আফরোজার চিৎকারে লোক জড়ো করা হয়।
পরিবারের সদস্যরা আরও জানান, বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলামকে টেলিফোনে জানানো হয়। চেয়ারম্যান পলাশ ও আফরোজাকে ধরে আনতে বলেন। হাসান ও হাফিজ দুজনকে বেঁধে নিয়ে যায় ইউনিয়ন পরিষদে।
পরিবারটি আরও জানায়, এরপর বিচারের নামে মেয়েটিকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেন চেয়ারম্যান মনিরুল। তিনি তাঁর গায়ে হাত তোলেন। বলেন, তুই তো আমার মতো মানুষের সাথে প্রেম করবি। ওর সাথে গেলি কেন?
আফরোজা চেয়ারম্যানকে জানায়, সে কারো সঙ্গে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়নি। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান মনিরুল মীমাংসা করে দেওয়ার কথা বলেন। এ জন্য পলাশের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ আদায় করে তাঁকে নির্দোষ বলে ছেড়ে দেন। আর আফরোজাকে নানাভাবে অপমানিত করে মারধর করে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। আফরোজা বাড়িতে আসার পর তার চাচা দীন মোহাম্মদ, আবদুল হাকিম ও আবদুর রাজ্জাক আফরোজাকে ফের মারধর করেন। শনিবার সন্ধ্যায় নিজ ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদ শেখ জানান, খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল সেখানে যায়। আফরোজার লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করা হয়। আফরোজার ভাই ইব্রাহীম খলিল কলারোয়া থানায় একটি মামলা করেন। এই মামলায় তিনি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলামকে তাঁর বোনের ওপর নির্যাতনকারী এবং তাঁর আত্মহত্যার প্ররোচনাকারী বলে উল্লেখ করেন। এ মামলায় আরো আসামি করেন হাফিজ, হাসান, চৌকিদার ইসলাম ও জয়কে। ওসি জানান, রাতেই মনিরুলসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মনিরুল সোনাবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান হয়েছেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়।