ময়মনসিংহে কাঁদে গোলাপজান
প্রকাশ : ২৪ আগস্ট ২০১৬, ০৩:১৪
ময়মনসিংহে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় তিন পুত্র মারা যায় কলেরার মড়কে। এরপর থেকে পুত্র শোকে পাগলিনী গোলাপজান বেওয়া। তার বাড়ি ময়মনসিংহে মুক্তাগাছায় গন্ধর্বপুর আয়মান গাঙ্গের পাড়ে । বয়স পঁচানব্বই প্রায়।
তার বিশ্বাস রাজাকার-আলবদর আর পাকবাহিনী কেড়ে নিয়েছে তার তিন পুত্রের জীবন। শূন্য করেছে তার বুক। চোখে -মুখে তার ক্ষুব্ধ অভিব্যক্তি। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা শহরের অফিসপাড়া আর পৌরসভা চত্তরে লোক সমাগমে তাকে প্রায় দিনই একা একা কথা বলতে দেখা যায়।
গোলাপজান বলে বেড়ান, মুক্তিযুদ্ধে তার অনেক ছেলে মরেছে। এ দেশের রাজাকার-আলবদররাই মেরেছে তার সন্তানদের। তিনি মুক্তিযুদ্ধের অনেক ভয়াবহ ঘটনাই হুবুহু বর্ণনা করেন যা নিরেট সত্য এবং বাস্তব, বানানো বা পাগলামি নয়। অনেকে তাকে নিয়ে তামাশা করলেও অনেকে শ্রদ্ধার চোখে দেখে। অনেকে তাকে সম্বোধন করেন, গোলাপজান বুবু বলে। ঠাট্টা করে কেউ নিকে রাজাকার বলে পরিচয় দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে অভিশাপ দেন তাকে।
আবার যদি কেউ নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেয়, মুহুর্তেই শান্ত হয়ে পড়েন; তার গালে হাত বুলিয়ে মায়ের মমতা জানান। অনেকে দু”এক টাকার বেসাতি কিনে খাওয়ান তাকে।
রেগে গেলে গোলাপজান বলেন, “যারা আমার পুতের কল্লা খাইছে তাগর বিচার আল্লায় করব”।
তার এই অনর্গল প্রলাপ শুনে মনে হবে না এটা পাগলের পাগলামি। একটু মনোযোগ দিলেই মায়ের আহাজারিতে ফুটে উঠবে একাত্তরে গনহত্যার শোকগাঁথা।