নিখোঁজ আফসানা ফিরলো লাশ হয়ে
প্রকাশ : ১৬ আগস্ট ২০১৬, ২০:১৯
৩দিন নিখোঁজ থাকার পর মিরপুরের সাইক ইন্সটিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট এন্ড টেকনোলজির স্থাপত্য বিদ্যার শেষ বর্ষের ছাত্রী ও ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী আফসানা ফেরদৌস (২৪) এর লাশ পাওয়া গেছে। হত্যার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
আফসানাকে নিজের ফুপাতো বোনের নাতনি পরিচয় দেয়া মুজতবা আহমেদ মোরশেদ জানিয়েছেন, "গত শনিবার (১৩ আগস্ট) রাতে অপরিচিত এক নাম্বার থেকে ফোন করে আফসানার মায়ের কাছে জানানো হয়, আফসানার লাশ বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। এরপর আফসানার মা ঠাকুরগাঁ থেকে আত্মীয়স্বজনদের বিষয়টি জানায়। খবর পেয়ে আফসানার মামা ও অন্যান্য স্বজনেরা ধানমণ্ডির বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান। কিন্তু আফসানার লাশ সেখানে পাওয়া যায়নি"।
তিনি বলেন, "ইতোমধ্যে অপর একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে আবার ফোন করে জানানো হয়, আফসানার লাশ মিরপুরের আল-হেলাল হাসপাতালে রয়েছে। তখন সবাই আল-হেলাল হাসপাতালে ছুটে যান। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলে, এ নামে একটি লাশ কাফরুল থানায় রয়েছে। এরপর কাফরুল থানায় পৌঁছানোর পর আফসানার ছবি দেখালে থানায় ডিউটিরত পুলিশ জানায় এমন চেহারার লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আছে। রাত তিনটায় ঢাকা মেডিকেল মর্গে আফসানার লাশ শনাক্ত করে ওর মামা এবং কাজিনরা"।
তিনি আরো বলেন, "যারা লাশ দেখেছে, প্রাথমিকভাবে তাদের ধারণা মেয়েটিকে ধর্ষণের পর রশির মতো কোন কিছু দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। ধর্ষণে একাধিক ব্যাক্তি জড়িতও থাকতে পারে বলে কেউ কেউ ধারণা করছেন"।
এই প্রসঙ্গে আল হেলাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, গত শনিবার বিকেলে দুইজন যুবক সিএনজি নিয়ে হাসপাতালের সামনে আসে। এসময় তারা জরুরী বিভাগে রোগী ভর্তির জন্য স্ট্রেচার নিয়ে আসতে বলে। হাসপাতালের লোকজন রোগীকে স্ট্রেচারে তুলে ভিতরে নেয়ার সময় যুবকেরা সিএনজির ভাড়া পরিশোধ করে ভেতরে আসছে বলে পরে আর কেউ আসেনি।
সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, রোগীর হাসপাতালে আসার আগেই মৃত্যু হয়েছিল। এ সময় মেয়েটির মৃতদেহের গলার নিচের দিকে গভীর দাগ দেখা যায়। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কাফরুল থানাকে জানায়।
এদিকে রবিবার আফসানার ময়না তদন্ত শেষে গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁয়ের রুহিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এই ব্যাপারে কাফরুল থানা পুলিশ জানিয়েছে, "এখনো ময়না তদন্তের রিপোর্ট জানা যায়নি। আগামী দু তিন দিনের মধ্যে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়া যাবে। এরপর আইনগত ব্যবস্থা নেবে পুলিশ"।
মুজতবা আহমেদ বলেন, আফসানার মৃত্যুসংবাদে আমাদের পরিবারের সদস্যেরা অশ্রুসিক্ত। আফসানার কানিকশালগাঁ এখন গভীরভাবে শোকার্ত।
তিনি বলেন, আফসানার কিছু বন্ধু-বান্ধব ধারণা করছে, ওর কাছের বন্ধুরাই এ নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডে জড়িত।
এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি। সবাইকে এই ঘটনার প্রতিবাদ করার জোর আহ্বান জানান তিনি।