প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ভাড়াটে 'ধর্ষক'!
প্রকাশ : ৩০ জুন ২০১৯, ১৬:২১
জমির বিরোধ নিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ভাড়াটে 'ধর্ষক' এনে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের পর দায়ের করা হয়েছে ধর্ষণ মামলা। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা উদ্ঘাটনের দাবি করেছে জামালপুরের পুলিশ।
এই ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- মেলান্দহ উপজেলার রেখিরপাড়া এলাকার ভাড়াটে ‘ধর্ষক’ ফজল মিয়া (৪৫) ও আইনজীবীর সহকারী (মুহুরি) খোশনবী (৩৫)।
২৮ জুন (শুক্রবার) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন এই ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরেন।
পুলিশ সুপার বলেন, গত ২৫ মে মেলান্দহ উপজেলার ফুলকোচা ইউনিয়নের একটি গ্রামে এক নারী ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এরপর ৩০ মে ঐ নারী বাদী হয়ে নিজের চাচাতো ভাই মো. নুরনবী (৩০) ও নুরনবীর বোনের স্বামী মো. ছাইরুলকে (৩৫) আসামি করে মেলান্দহ থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। মামলায় নুরনবীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের এবং ছাইরুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়। ঐ নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষায়ও ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া যায়। কিন্তু তদন্তে উঠে আসে নতুন এক তথ্য।
তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, ৭ শতাংশ জমি নিয়ে ঐ নারীর সঙ্গে তার চাচাতো ভাই নুরনবীর বিরোধ রয়েছে। এ কারণে নুরনবী সহ পাঁচজনের নামে আদালতে একটি মামলাও করেন ঐ নারী। কিন্তু আসামিরা আদালতে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেয়ে গেলে তাদের কাবু করতে নতুন উপায় খুঁজতে থাকেন ঐ নারী। এ নিয়ে তিনি মুহুরি খোশনবীর কাছে সহায়তা চাইলে চাচাতো ভাইয়ের নামে ধর্ষণের মামলা করার পরামর্শ দেন খোশনবী। কিন্তু মিথ্যে ধর্ষণের মামলা দিলে ধরা পড়ে যেতে পারেন ভেবে খোশনবী ২২ হাজার টাকা চুক্তিতে নিজের দূরসম্পর্কের মামা ফজল মিয়াকে ভাড়া করে আনেন। এরপর পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৫ মে রাতে ঐ নারীকে মেলান্দহের কোনা মালঞ্চ ব্যাপারীপাড়া মোড়ের একটি ধানখেতে নিয়ে যান খোশনবী। সেখানে ভাড়াটে ধর্ষক ফজল মিয়াও আসেন। সেখানে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের পর ঐ নারীকে সেখান থেকে উদ্ধার দেখিয়ে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেন বলেন, মামলাটির তদন্তে এমন তথ্য উঠে আসার পর গত বৃহস্পতিবার ঐ নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি সবকিছু স্বীকার করেন। পরে বিকেলে দণ্ডবিধির ২২ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, জামালপুর শহর থেকে খোশনবীকে ও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে ফজল মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারাও পুরো বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এখন ঐ নারীর চাচাতো ভাইদের নাম মামলা থেকে বাদ দিয়ে তাদের আসামি করে মামলা করা হবে।