ভয়ে নবজাতককে ট্রাঙ্কবন্দি, ফলাফল মৃত্যু
প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০১৯, ১৭:২০
গত ১৬ মার্চ (শনিবার) দুপুরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা হলে এক ছাত্রীর ট্রাঙ্ক থেকে এক নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে হত্যার উদ্দেশ্যে নয় ভয় পেয়েই নিজের সদ্যোজাত শিশুকে ট্রাঙ্কে লুকিয়ে রেখেছিলেন বলে জানিয়েছেন ঐ ছাত্রী। ঐ ছাত্রীকে নিজের স্ত্রী এবং মৃত নবজাতককে নিজের সন্তান হিসেবে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শহীদ সালাম বরকত হলের আবাসিক ছাত্র রনি মোল্লা।
ঐ ছাত্রী জানান, একই কলেজে পড়ার সুবাদে সেসময় থেকেই তিনি আর রনি মোল্লা একে অপরকে পছন্দ করতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর ২০১৭ সালের ৮ এপ্রিল তারা বিয়ে করেন। পরে দুই পরিবার সেটা মেনে নেয়। গত শনিবার সকাল থেকে তার প্রসব ব্যথা শুরু হয় এবং রক্তপাত হতে থাকে। এতে তিনি ভয় পেয়ে যান। স্বামী রনি মোল্লাকে ফোন করে তার ফোন বন্ধ পান তিনি। পরে সন্তান প্রসব করার সময় নবজাতকের নাড়ি ভেতর থেকে ছিঁড়ে যায়। কি করবেন বুঝতে না পেরে ভয়ে শিশুটিকে ট্রাঙ্কে লুকিয়ে রাখেন তিনি।
হলের অন্য শিক্ষার্থীরা জানান, দুপুরে ঐ নবজাতককে উদ্ধার করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শমতো নবজাতকটিকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌনে ১০টার দিকে নবজাতকটির মৃত্যু হয়।
এ ব্যাপারে রনি মোল্লা বলেন, ২০ মার্চ তাদের সন্তান জন্মের সম্ভাব্য তারিখ ছিল। গত শনিবার সকালে তিনি টিউশনিতে যান। এসময় ঐ ছাত্রী তাকে ফোন করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ফোনে চার্জ না থাকায় তার ফোনটি এসময় বন্ধ ছিল। পরে সন্ধ্যায় খবর পেয়ে তিনি হাসপাতালে ছুটে যান। কিন্তু তাদের বিয়ের বিষয়টি তেমন কেউ জানতো না বলে তার কথা কেউ বিশ্বাস করেনি।
এদিকে ১৭ মার্চ রবিবার (সকালে) সংশ্লিষ্ট হলের প্রাধ্যক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের উপস্থিতিতে ঐ ছাত্রীর বাবার কাছে নবজাতকের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। মৃত্যুর সনদে নবজাতকটির ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’ হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুজিবর রহমান।
এই ঘটনায় চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।