নিজ অর্থে শহীদ মিনার গড়লেন শিক্ষক
প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২০:৩৪
প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে সবাই ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় শহীদ মিনারে। কিন্তু টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার প্রতিমাবংকী গ্রামের মানুষদের জন্য গল্পটা এমন ছিল না এতোদিন। এই গ্রাম থেকে সখীপুর উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে হওয়ায় গ্রামের বাসিন্দারা কখনোই শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে যাননি। কিন্তু এই বছর প্রথমবারের মতো তারাও শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাবেন। কারণ প্রতিমাবংকী পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েই এবার নির্মিত হয়েছে শহীদ মিনার। আর এসবই সম্ভব হয়েছে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আলেয়া ফেরদৌসীর জন্য।
আলেয়া ফেরদৌসী জানান, ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো থেকে যখন ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবসকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় তখন থেকেই নিজ বিদ্যালয়ে একটি শহীদ মিনার নির্মাণের স্বপ্ন দেখেন তিনি। আর সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে প্রতি মাসের বেতন থেকে সাংসারিক খরচ মিটিয়ে কিছু উদ্বৃত্ত টাকা জমানো শুরু করেন তিনি। এরপর ২০১৭ সালে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে শুরু করেন শহীদ মিনার নির্মাণের কাজ। প্রায় ৩৬ হাজার তাকা খরচ করে শহীদ মিনার নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করেন তিনি। আর এর পুরোটাই তিনি ব্যয় করেছেন নিজের জমানো অর্থ থেকে। এবার ২১শে ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবারের মতো শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাবেন প্রতিমাবংকী গ্রামের শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের বাসিন্দারা।
সখীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মানবেন্দ্র দাস জানান, "সখীপুর উপজেলায় ১৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে গত বছর পর্যন্ত মাত্র পাঁচটিতে শহীদ মিনার ছিল। এবছর ৭৬টি স্কুলের খুদে শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করবে। প্রতিমাবংকী পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বেগম আলেয়া ফেরদৌসী নিজের টাকায় শহীদ মিনার করায় আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ। তার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আরও বেড়েছে"।