‘জঙ্গি হোতা’ জিয়া ও তামিম, ধরতে পারলে পুরস্কার
প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০১৬, ১৪:২৬
সাম্প্রতিক জঙ্গি কর্মকাণ্ড ও হামলার হোতা হিসেবে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টার পরিকল্পনাকারী বরখাস্ত মেজর সৈয়দ মো. জিয়াউল হক এবং বাংলাদেশে আইএস এর কথিত সমন্বয়ক কানাডীয় পাসপোর্টধারী বাংলাদেশি নাগরিক তামিম চৌধুরীকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। তাদের ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকা করে পুরস্কারও ঘোষণা করেছে পুলিশ।
পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক মঙ্গলবার পুলিশ সদর দপ্তরে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, “তদন্ত করতে গিয়ে আমরা যা পেয়েছি, এখানে মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী। নিউ জেএমবির নেতৃত্ব সে দিচ্ছে। এই তামিম চৌধুরীর পর যারা দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রধান তাদেরকেও আমরা চিহ্নিত করেছি। তাদেরকে আমরা গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।”
শহীদুল হক আরো বলেন, “আরেকটা গ্রুপ আছে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম। সেখানে তদন্তে আমাদের ধারণা হয়েছে, তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া।”
পুলিশ তামিম ও জিয়াকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে জানিয়ে এ কাজে জনগণের সহযোগিতা চান পুলিশ প্রধান।
তিনি বলেন, “যদি দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার জন্য কেউ সহায়তা করেন কিংবা গ্রেপ্তার করে জানান, তাহলে প্রত্যেকের জন্য আমরা ২০ লাখ টাকা করে দেব। সংবাদদাতা ও তথ্যদাতার পরিচয় গোপন থাকবে।
ওই দুইজন এবং তাদের পরবর্তী নেতৃত্বকে গ্রেপ্তার করা গেলে দেশে ‘জঙ্গি তৎপরতা একেবারে কমিয়ে আনা’ যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
২০১২ সালের ১৯ জানুয়ারি সেনাবাহিনী এক সংবাদ সম্মেলনে সরকার উৎখাতে ধর্মান্ধ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার একটি অভ্যুত্থান পরিকল্পনা নস্যাৎ করার খবর দেয়। তখনই প্রবাসী ব্যবসায়ী ইশরাক আহমেদ ও মেজর সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হকের নাম আসে, যারা ওই অভ্যুত্থান চেষ্টার মূল পরিকল্পনাকারী বলে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়।
গত দুই বছরে বাংলাদেশে একের পর এক ব্লগার, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, লেখক-প্রকাশক, বিদেশি নাগরিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু হত্যার প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি আবারও জিয়ার নাম আলোচনায় আসে।
আইএস ও আল কায়েদার পক্ষ থেকে এসব ঘটনার দায় স্বীকার করা হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নাম বদলে আনসার আল-ইসলাম বাংলাদেশ হিসেবে এবং আরেক নিষিদ্ধ দল জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) এসব হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে। আর সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া হয়তো আনসার আল ইসলামের সঙ্গে আছেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলামকে উদ্ধৃত করে গত জুনে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, “আমাদের সন্দেহ, সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা তাদের একজন নেতা। তিনি আত্মগোপন করে আছেন, কিন্তু আমরা তার সক্ষমতা জানি। তিনি যদি এর মধ্যে জড়িয়ে থাকেন, তাহলে তা আনসার আল ইসলামের জন্য একটি বড় শক্তির জায়গা হবে।”