বিচার না পেয়ে নির্যাতিত গৃহবধূর আত্মহত্যা
প্রকাশ : ০৯ আগস্ট ২০১৮, ১২:৫১
![](https://bangla.jagoroniya.com/templates/jagoroniya-v1/images/jagoronia.png)
![](/assets/news_photos/2018/08/09/image-16397.jpg)
মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তিন বখাটের নির্যাতন ও অপমান সইতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল ইউনিয়নের সরাবাড়িয়া গ্রামে শিপ্রা কস্তা (৩০) নামে এক গৃহবধূ।
০৭ আগস্ট (মঙ্গলবার) রাতে নিজ ঘরে তিনি আত্মহত্যা করেন। ০৮ আগস্ট (বুধবার) সকালে পুলিশ শিপ্রার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। শিপ্রা কস্তা ওই গ্রামের ডমিনিক রোজারিওর স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, দুই মেয়েকে নিয়ে শিপ্রা তার স্বামীর বাড়িতে থাকতেন। তার স্বামী ঢাকায় চাকরি করেন। ১৭ জুলাই রাতে স্থানীয় শাহ আলম নামে এক মুদি দোকানী পাওনা টাকা চাইতে শিপ্রার বাড়িতে যান।
এসময় স্থানীয় বখাটে সংগ্রামপুরের রমজান ফকিরের ছেলে আলম ফকির (২৮), সরাবাড়িয়া গ্রামের মান্নান আলীর ছেলে সবুজ সরকার (৩৩), আনার কুলির ছেলে আবু হানিফ (৩৫) তাদের বাড়িতে গিয়ে শিপ্রা ও ওই মুদি দোকানীকে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে অপবাদ দিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন।
এক পর্যায়ে বখাটেরা শিপ্রা ও মুদি দোকানীর ওপর নির্যাতন চালিয়ে নগ্ন করে ভিডিও করে। এসময় বখাটেরা তাদের দাবিকৃত টাকা তিনদিনের মধ্যে দিতে ব্যর্থ হলে ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। একই সঙ্গে শিপ্রার গলায় থাকা একটি স্বর্ণের চেইন, বাড়িতে থাকা নগদ ১০ হাজার টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
পরে এ ঘটনার বিচার চেয়ে শিপ্রা বড়াইগ্রাম থানায় অভিযোগ করেন। পাশাপাশি জোনাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হকের কাছেও নালিশ দেন। কিন্তু দীর্ঘদিনেও শিপ্রা কোনো বিচার পাননি। এদিকে বখাটেরা বিভিন্ন জায়গায় তার নগ্ন ভিডিও প্রদর্শন করতে থাকে। এতে লজ্জা আর অপমান সইতে না পেরে তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
ইউপি চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হক জানান, শিপ্রার পরিবার রহস্যজনক কারণে মামলা করতে রাজি ছিলেন না। ধারণা করা হচ্ছে, মামলা করলে আরও বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা ছিল। তিনি দোষীদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেছেন।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলিপ কুমার দাস জানান, শিপ্রা অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু পরক্ষণেই তারা মামলা না করে স্থানীয়ভাবে মিমাংসার কথা বলেন। তবু তাদের কাছ থেকে শুনে পুলিশ পাঠিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করে। এ ঘটনায় পেছনে যারা দায়ী তাদের কোনভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।