যৌতুকের টাকায় চাকরি নিয়ে স্ত্রীকে তালাক
প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০১৮, ০০:৩০
স্ত্রীর পরিবারের কাছ থেকে যৌতুকের বিশাল অঙ্কের টাকা নিয়ে সেই টাকা দিয়ে নিজের চাকরি জুটিয়েছেন। তারপর চাকরি পেয়ে সেই স্ত্রীকেই তালাক দিয়েছেন পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পাওয়া সেই ব্যক্তি। এ ঘটনায় আলামিন নামে ওই পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন স্ত্রী জান্নাতুল।
গত ৮ মার্চ (বৃহস্পতিবার) পাবনার আমলি আদালত-৩ এ মামলা করেন সাঁথিয়া উপজেলার পাইকরহাটি গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস। মামলায় স্বামী আলামিনের বাবা কাজীপুর গ্রামের মিজানুর রহমান ও মা বুলবুলি খাতুনকেও আসামি করা হয়েছে।
জানা যায়, সাত লাখ টাকা দেনমোহরে ২০১৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রেজিস্ট্রি ছাড়া জান্নাতুল ও আলামিনের বিয়ে হয়। বিয়ের চারদিন পর আলামিন তিনশ’ টাকার স্ট্যাম্পের মাধ্যমে নগদ পাঁচ লাখ এবং চেকের মাধ্যমে আরও দুই লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে নেন।
কিন্তু সেই টাকা দিয়ে চাকরি পওয়ার পর থেকে আলামিন ও তার বাড়ির লোকজন আরও পাঁচ লাখ টাকার দাবিতে জান্নাতুলকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকেন। টাকা দিতে না পারায় তারা ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে জান্নাতুলকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি স্ত্রী জান্নাতুলকে তালাকনামা পাঠান তিনি।
এ বিষয়ে জান্নাতুল বলেন, বাবার গচ্ছিত টাকা দিয়ে সুখের আশায় এ বিয়ে হয়। অথচ আমার স্বামী আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তাই বাধ্য হয়ে মামলা করেছি।
জান্নাতুলের মা নাসরিন নাহার বলেন, এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে মেয়ের জামাইকে সাত লাখ টাকা দিয়েছি। পরে আরও টাকা খরচ করে তাকে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়। চাকরি পেয়েই আলামিন আরও টাকার জন্য টালবাহানা শুরু করে। তারপর এলাকাবাসীর চাপে ওদের বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়। তারপরও আলামিন যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে নির্যাতন করতে থাকে। একপর্যায়ে মারধর করে জান্নাতুলকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। তারপর আমার মেয়েকে তালাকনামা পাঠিয়েছে আলামিন।
তবে তালাকনামার ব্যাপারে আলামিন বলেন, সংসারে নানা বিষয় নিয়ে জান্নাতুল খুবই খারাপ আচরণ করে বলে তালাকনামা পাঠিয়েছি।
মামলার আইনজীবী আব্দুর রউফ বলেন, স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে আলামিন যে যৌতুক নিয়েছেন, তার সব প্রমাণপত্র উপস্থাপন করার পর আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ২৪ এপ্রিল আসামিদের হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।