নিহত রূপার বাড়িতে মাতম, শাস্তির দাবি
প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০১৭, ১৭:৫২
চলন্ত বাসে সিরাজগঞ্জের তাড়াশের তরুণীকে গণধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় নিহতের বাড়িতে চলছে মাতম। তার মা হাসনা হেনা বেগম মেয়ের জন্য কান্না করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাকে বুধবার সকালে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
রূপাদের বাড়ির চারিদিকে এখন বন্যার পানি। এরই মাঝে আশপাশের শত শত নারী-পুরুষ ওই বাড়িতে গিয়ে তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। অপরাধীরা ধরা পড়লেও পুরো গ্রামের মানুষ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
নিহতের ছোট বোন মাশরুফা আক্তার পপি বলেন, বাবা মারা যাবার পর অনেক কষ্ট করে বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে অনার্স শেষ করে ভর্তি হয় ঢাকার আইডিয়াল ল’ কলেজে। পড়াশোনায় মেধাবী রূপার স্বপ্ন ছিলো আইন বিষয়ে পড়ে আরো ভালো কিছু করার। কিন্তু সংসারের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় সংসারের দেখভালের জন্য পড়াশোনার পাশাপাশি তারা ২ বোন চাকরি নেয় ময়মনসিংহের ইউনিলিভার কোম্পানিতে।
এদিকে, টাঙ্গাইলে অবস্থানরত রূপা’র বড় ভাই হাফিজুর রহমান আজ বেলা ১২টার দিকে মোবাইলে জানান, লাশ উত্তোলনের জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আশা করছি আজকেই সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে। তারপর আমরা লাশ নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হবো।
এদিকে দুপুরে পুলিশ হেফাজতে থাকা বাসের চালক ও সুপারভাইজারকে আদালতে পাঠানো হবে। তারা আদালতে নিজেদের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে রাজী হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ মামলায় গ্রেপ্তার ৩ হেলপার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার পর রাতেই তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
মধুপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম জানান, লাশ উত্তোলনের জন্য চিফ জুডিশয়াল আদালতে আবেদন দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ছোঁয়া পরিবহনের একটি বাসে করে ২৫ আগস্ট (শুক্রবার) রাতে বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে বর্বর নির্যাতন ও হত্যার শিকার হন রূপা। চলন্ত বাসে ধর্ষণের পর হত্যা করে টাঙ্গাইলের মধুপুর এলাকায় জঙ্গলের মধ্যে রাস্তার পাশে ফেলে দেওয়া হয়।
গত ২৬ আগস্ট (শনিবার) লাশ উদ্ধার করে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন ও একটি অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা করে পুলিশ।
গণমাধ্যমে লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে সোমবার রাতে মধুপুর থানায় গিয়ে ছবি দেখে রূপাকে শনাক্ত করে তার পরিবার। পরে রূপার বড় ভাই হাফিজুর রহমান ছোঁয়া পরিবহনের শ্রমিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে।
এরা হলেন- বাসের চালক ময়মনসিংহের মির্জাপুরের শহিদুল ইসলামের ছেলে হাবিব, সুপারভাইজার একই এলাকার সুলতান আলীর ছেলে সফর আলী ওরফে গেদু, হেলপার কামাল হোসেনের ছেলে আকরাম হোসেন, হেলপার এমদাদুল হকের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন ও হেলপার মুক্তাগাছা উপজেলার নন্দীবাড়ির খোরশেদ আলীর ছেলে শামীম হোসেন।