গুলশান হামলা: জঙ্গিদের নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না
প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০১৬, ১৭:১৯
রাজধানীর গুলশান ২ এর ৭৯ নং সড়কে হলি আর্টিসান রেস্তোঁরায় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় জড়িত জঙ্গিদের সংখ্যা নিয়ে তৈরী হয়েছে নানা জটিলতা। বিভিন্ন বক্তব্য ও ছবির মধ্যে সঙ্গতি না থাকায় এ নিয়ে যেন ধোঁয়াশা কাটছেই না।
আক্রমনের রাতেই হলি আর্টিসান এর পালিয়ে আসা ম্যানেজার সুমন রেজা জানান, ভেতরে ৭/৮ জন সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। পরদিন আইএসপিআর এর বক্তব্যেও বলা হয় ৬ জন সন্ত্রাসী নিহত ও ১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরদিন সকালে অভিযান শেষে প্রধানমন্ত্রী ও আইএসপিআর জানায় ৭ জঙ্গির ৬ জন নিহত ও ১ জন আটক। কিন্তু বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সন্ত্রাসীদের যে লাশের ছবি প্রকাশিত হয়েছে সেখানে ৫টি লাশ দেখানো হয়। আইএস হামলাকারীদের যে ছবি প্রকাশ করেছে সেখানেও ৫ জনের ছবিই দেয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে আরেকজন জঙ্গি গ্রেফতার হলে মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ৬। তাই প্রশ্ন উঠেছে যদি ৬ জন জঙ্গি নিহত হয়ে থাকে তবে নিহত আরেক জঙ্গির লাশ কোথায়?
শুধু তাই নয়, প্রশ্নবিদ্ধ আরো অনেক কিছুই যার জবাব মিলছে না। কমান্ডো অভিযান শেষে ঐ রেস্তোঁরার সামনের মাঠে পড়ে থাকা যে লাশের ছবি রয়েছে সেখানে সাদা টিশার্ট পরা কাউকে দেখা যায়নি। কিন্তু পরবর্তীতে যে ৫টি লাশের ছবি প্রকাশ করা হয় গণমাধ্যমে সেখানে সাদা টিশার্ট পরিহিত একজনকে দেখা যায়। দাবি করা হচ্ছে সাদা টিশার্ট পরা সেই লোকটি আসলে সন্ত্রাসী না বরং সেই রেস্তোঁরার শেফ ছিলেন। সেক্ষেত্রে আসলে কতজন জঙ্গি ছিল, ক'জন নিহত হয়েছে, কিংবা নিহত জঙ্গিদের সঠিক ছবি কোনটি এসব নিয়ে এখনো অস্পষ্টতা রয়েই গেছে।
এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা ইমতিয়াজ খান বাবুলের ছেলে রোহান ইমতিয়াজ এর ছবি রয়েছে আইএস প্রকাশিত হামলাকারীদের ছবিতে। তবে নিহত জঙ্গিদের সাথে তার লাশ রয়েছে কিনা সেটাও পরিষ্কার নয়। সেক্ষেত্রে রোহান ইমতিয়াজই গ্রেপ্তারকৃত সেই জঙ্গি কিনা, নাকি অন্য কেউ আইএসপিআর এর পক্ষ থেকে তা জানানো হয়নি বলে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে ৮/৯ জন অস্ত্রধারী যুবক 'আল্লাহু আকবর' বলে স্লোগান দিতে দিতে হলি আর্টিসান নামক ঐ রেস্তোঁরায় আক্রমন চালায়। এসময় তারা ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে সবাইকে জিম্মি করে নেয় ও বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এই ঘটনায় নিহত হয়েছেন বনানী থানার ওসি সালাহ উদ্দিন ও ডিবির সহকারী কমিশনার রবিউল। পুলিশ সদস্য সহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
শনিবার সকালে উদ্ধার অভিযান শেষে দুপুরে ২০ জন বিদেশির জবাই করা লাশ উদ্ধারের কথা জানায় আইএসপিআর। ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে শ্রীলঙ্কার দুজন ও জাপানের এক নাগরিক রয়েছেন।