স্বামীর মাথা কেটে থানায় স্ত্রী
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০১৬, ১৩:৩৫
‘স্যার, কোদাল দিয়ে কুপিয়ে বরের ধড়-মুণ্ড আলাদা করেছি। আমাকে ধরুন।’ এক মধ্যবয়সী নারী থানায় এসে এভাবেই তার বক্তব্য জানালো ডিউটি অফিসারকে। অফিসার অবাক হয়ে জানতে চাইলেন, ‘সত্যি বলছেন?’
ওই নারীর জবাব, ‘মিথ্যে কেন বলব? একবার আমার সঙ্গে চলুন।’
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের চব্বিশ পরগনায়। থানা থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ফলতার বঙ্গনগর গ্রামে সেই নারীর বাড়িতে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায় ঘটনা সত্যি।
ঘরের মেঝেতে রক্তে মাখামাখি আর রক্তের মধ্যে পড়ে আছে স্বামীর শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন মৃতদেহ।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অনিমা পাল নামে বছর পঁয়ত্রিশ বছর বয়সী ওই নারীকে। তার স্বামী দিব্যেন্দু পালের (৪০) দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্ত শেষে পুলিশ জানায়, প্লাইউডের দোকানে কাজ করতেন দিব্যেন্দু। প্রতিমাও গড়তেন। বছর তেরো আগে পাশের বাড়ির অনিমার সঙ্গে বিয়ে হয় তার। পাল দম্পতির বারো বছরের ছেলে ও আট বছরের মেয়ে আছে।
জানা গেছে, দিব্যেন্দুর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ককে কেন্দ্র করে অশান্তি ঘনায় সংসারে। মাস আটেক আগে কলকাতায় কাজে গিয়ে এক কিশোরী পরিচারিকার সঙ্গে আলাপ হয় তার। মালদহের ওই মেয়েটিকে ঘরে তোলেন তিনি। যা মেনে নিতে পারেননি অনিমা। এ নিয়ে গাঁয়ের মাতব্বরদের সামনে ঠিক হয়, এক বাড়িতেই পাশাপাশি দুই ঘরে ঠাঁই পাবে দুই বৌ। তবে হাঁড়ি আলাদা হবে না। কিন্তু সংসারে শান্তি ফেরেনি।
প্রতিবেশীদের থেকে পুলিশ জেনেছে, মাঝে মধ্যেই ঝগড়ার শব্দ আসত বাড়ি থেকে। অভিযোগ, অনিমা দেবীকে মারধর করতেন দিব্যেন্দু। তবে দ্বিতীয় পক্ষ আসার আগে অনিমাকে ঝগড়াঝাটি করতে দেখেননি কেউ। শুক্রবার বিকালে অনিমার দুই ছেলেমেয়ে বাড়ি ছিল না। ছিল না দ্বিতীয় পক্ষের ‘স্ত্রী’ও।
অনিমা পুলিশকে জানিয়েছেন, স্বামীর উপরে অনেক দিনের রাগ জমে ছিল তার। পরিস্থিতি বুঝে ঘুমন্ত স্বামীর গলায় কোদালের কোপ মারেন। ঘটনাস্থলেই ছটফট করতে করতে মারা যান দিব্যেন্দু। জেরা করা হচ্ছে অনিমাকে। ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সূত্র: আনন্দবাজার