মৃত স্ত্রীকে ঘাড়ে নিয়ে ১০ কিলোমিটার পাড়ি
প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০১৬, ১৬:২০
দীর্ঘদিন যক্ষ্মায় ভুগে অবশেষে মারা গেছেন স্ত্রী। কিন্তু তার মৃতদেহ বাড়ি নেয়ার জন্য বিনে পয়সায় গাড়ি দেবে না হাসপাতাল। পকেটে পয়সাও নেই যে গাড়ি ভাড়া করবেন। অগত্যা স্ত্রীর মৃতদেহ ঘাড়ে চাপিয়েই ১০ কিলোমিটার পথ হেঁটে গেলেন স্বামী। নির্মম এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের ভওয়ানি পাটনায়।
বুধবার জেলা হাসপাতালে মৃত্যু হয় দানা মাঝির স্ত্রীর। ভওয়ানিপাটনা জেলা হাসপাতাল থেকে মেলঘরায় তার বাড়ির দূরত্ব ৬০ কিলোমিটার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে মৃতদেহটি বাড়িতে পৌঁছে দিতে বললে বিনিময়ে টাকা চায় তারা। কিন্তু আর্থিক সামর্থ না থাকায় তা সম্ভব হয়নি দানা মাঝির পক্ষে। শেষ পর্যন্ত কোনো উপায় না পেয়ে স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে তুলে হাঁটা শুরু করেন তিনি। বাবার সঙ্গে হাঁটা শুরু করেন দানা মাঝির ১২ বছরের মেয়েও।
পায়ে হেঁটে ১০ কিলোমিটার যাওয়ার পর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের নজরে পড়েন মাঝি। পরে তাদের উদ্যোগে একটি গাড়ির ব্যবস্থা হয়। সেই গাড়িতেই বাড়ি পৌঁছান তিনি।
যে সাংবাদিক গাড়ির ব্যবস্থা করেন তাকে মাঝি বলেন, "হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিজের অসামর্থের কথা বলেছি। তাদের অনেক অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা আমাকে সাহায্য করতে অস্বীকার করেন"।
এই ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের বিধানসভা সদস্য কালিকেশ সিং দেও। হরিশচন্দ্র যোজনার আওতায় ওই পরিবারকে আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক।
উল্লেখ্য, ভারতের দরিদ্র রাজ্যগুলোর মধ্যে উড়িষ্যা অন্যতম। সেখানে চিকিৎসা সেবা পাওয়াও কঠিন। তবে দুঃস্থ পরিবারগুলির কথা ভেবে গত ফেব্রুয়ারিতেই ‘মহাপ্রয়াণ’ প্রকল্প চালু করেছিল উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের সরকার। তাতে বিনা খরচে সরকারি হাসপাতাল থেকে গাড়ি পাঠিয়ে মৃতদেহ পৌঁছে দেওয়ার হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। ৩৭টি সরকারি হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সও দেওয়া হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন ব্যবহারে প্রশ্ন উঠছে।