পশুপ্রেমীদের কর্মসূচিতে লাঠিচার্জ, অভিনেত্রীসহ আহত অনেকে
প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০১৯, ২১:১১
নীলরতন সরকার হাসপাতাল চত্বরে ১৬টি কুকুর ছানা হত্যার ঘটনায় পশুপ্রেমীদের অবস্থান কর্মসূচিতে লাঠিচার্জ করেছে কলকাতার বিধাননগর পুলিশ। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত, অভিনেতা তথাগত মুখোপাধ্যায়সহ আরও অনেকে।
গত ২২ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) অভিযুক্ত নার্সদের কেন হাসপাতালে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তার প্রতিবাদে সল্টলেকে স্বাস্থ্য ভবনের কাছে অবস্থানে বসেছিলেন কয়েকজন পশুপ্রেমী। গভীর রাতে সেই অবস্থান কর্মসূচি তুলতে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ে পুলিশ। দুইপক্ষের ধস্তাধস্তিতে একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করলে অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত, অভিনেতা তথাগত মুখোপাধ্যায়সহ বেশ কয়েকজন আহত হন। এমনকি অন্যদের পুলিশ টেনেহেঁচড়ে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে।
আন্দোলনকারীদের জানান, রাত ১টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ অবস্থান চলছিল। এরপর পুলিশ এসে জানায় এখানে আর বসা যাবে না। এসময় আন্দোলনকারীরা জানান, অত রাতে ওখান থেকে যাবেন না। অনেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন। সকাল হলে অবস্থান তুলে নেওয়া হবে। তাদের অভিযোগ, পুলিশকে এত কথা জানানোর পরেও তাঁরা অবস্থানের অনুমতি দেয়নি। জোর করে তুলে দিয়ে লাঠিচার্জ করে পুলিশ।
অভিনেতা তথাগত মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “কী ভাবে প্রতিবাদ করতে হয়, তা আমরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে শিখেছি। রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখাইনি আমরা। স্বাস্থ্য ভবন থেকে অনেকটা দূরে শান্তিপূর্ণ অবস্থার কর্মসূচি ছিল আমাদের। পুলিশ মাঝ রাতে এভাবে মারধর করবে ভাবতেও পারিনি। পুলিশ জোর করে মোবাইলের ভিডিও, ছবি, সব মুছে দেওয়ার চেষ্টা করে। যাতে তাদের ছবি প্রকাশে না আসে।”
অভিনেত্রী দেবলীনা দত্তের অভিযোগ, “সেখানে নারী পুলিশ ছিল। তা সত্ত্বেও পুরুষ পুলিশ কর্মীদের দিয়ে নারীদের নিগ্রহ করা হয়েছে। গালিগালাজ করতেও ছাড়েননি। কেন পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান জোর করে তুলতে গেল? কেন এত জনকে মারধর করা হল, তার জবাব দিতে হবে।”
উল্লেখ্য, গত ১৩ জানুয়ারি (রবিবার) দুপুরে নার্সিং হোস্টেলের সামনের ফাঁকা জায়গায় বিস্কুট দেখিয়ে কুকুরছানাগুলো জড়ো করে সেগুলোকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এই হোস্টেলের পাশেই রয়েছে কলকাতা আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল। সেখানকার এক ছাত্র সৌরভ চক্রবর্তী এই কুকুরছানা হত্যার ঘটনা গোপনে ভিডিও করেন। সেদিনই সেই ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। এরপর ওই নার্সিং কলেজের পাঁচ ছাত্রীকে নিষেধাজ্ঞা দেয় কর্তৃপক্ষ। তবে অনেকের দাবি এই পাঁচ ছাত্রীকে কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হোক। কিন্তু সম্প্রতি অভিযুক্তরা আবার হাসপাতালে তাদের দায়িত্বে বহাল হলে বিক্ষোভে নামেন পশুপ্রেমীরা।
সূত্র: আনন্দবাজার