শবরীমালা মন্দিরে ২ নারীর প্রবেশ, কেরালা জুড়ে সহিংসতা
প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০১৯, ১৮:৩৪


ভারতের কেরালা রাজ্যে নিষেধাজ্ঞা ভেঙে শবরীমালা মন্দিরে দুই নারীর প্রবেশের ঘটনায় বিক্ষোভ ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, চলমান সহিংসতায় অন্তত একজন নিহত হয়েছে। সহিংস বিক্ষোভকারীদের ছোড়া পাথরে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে কেরালার পুলিশ। এছাড়া কেরালার রাজধানী থিরুভাথাপুরমে কয়েকজন সাংবাদিকও আহত হয়েছেন। হামলার শিকার নারী পুলিশ কর্মকর্তাও। এ ঘটনায় বন্ধ রয়েছে রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি যান চলাচলও স্থগিত রয়েছে। তাছাড়া ভারতের এয়ারলায়েন্সগুলোকেও সতর্ক করেছে রাজ্যের পুলিশ।
সহিংসতা ও সংঘর্ষ উসকে দেয়ার জন্য কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি) দায়ী করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিন্নারাই বিজয়ন-জানিয়েছে আনন্দবাজার।
গত ২ জানুয়ারি (বুধবার) স্থানীয় সময় ভোরে লর্ড আয়াপ্পার মন্দিরে প্রবেশ করে ইতিহাস রচনা করেন ৪০ বছর বয়সী বিন্দু আম্মিনি ও ৩৯ বছরের কনকা দূর্গা। বিন্দু ও কনকা এর আগেও মন্দিরে ঢোকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন। ঘটনা জানাজানি হলে তুলকালাম পড়ে যায় মন্দির সংলগ্ন আশেপাশের এলাকায় এবং তা পরে পুরো রাজ্যে ছড়িয়ে যায়। এ ঘটনায় ক্ষুব্দ হয়ে বিভিন্ন শহরের রাস্তায় নেমে ভাংচুর, বিক্ষোভ করে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরা। বিন্দু ও কনকাকে মন্দির থেকে বের করে দিয়ে মন্দিরে শুরু হয় ‘শুদ্ধিকরণ’ অভিযান।
উল্লেখ্য, লর্ড আয়াপ্পার মন্দির শবরীমালায় দীর্ঘ সময় ধরে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়স্ক নারীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। ২০১৮ সালের শেষের দিকে এক আদেশে দেশটির সুপ্রীম কোর্ট ওই নিষেধাজ্ঞাকে ‘অবৈধ’ অ্যাখ্যা দিয়ে তা তুলে দেয়ার ঐতিহাসিক রায় দেয়। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতের রায়কে উপেক্ষা করে নিজেদের নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রাখে মন্দির কর্তৃপক্ষ ও ভক্ত-সমর্থকদের পাশাপাশি কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো। নারীরা মন্দিরটিতে ঢুকতে চাইলেও তাদের বাধা দেওয়া হয়। এমন কী পুলিশ পাহারায়ও সেখানে কেউ প্রবেশ করতে পারেননি। শবরীমালা মন্দিরে নারীর প্রবেশের ক্ষেত্রে হিন্দু সংগঠনগুলোর আপত্তি থাকলেও কেরালার ক্ষমতাসীন সিপিএম শুরু থেকেই সুপ্রিম কোর্টের আদেশ বাস্তবায়নের পক্ষে ছিলেন।