ব্রিটিশ এমপির বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ

প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০১৮, ১৭:০৯

জাগরণীয়া ডেস্ক

ব্রিটেনের হাউজ অব লর্ডসের সদস্য লর্ড লেস্টারের (৮২) বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন দেশটির স্বনামধন্য এক নারী অধিকারকর্মী। অভিযোগে সত্যতা পাওয়ায় লেস্টারকে পার্লামেন্টারি পদ থেকে প্রায় সাড়ে ৩ বছরের জন্য অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

নারী অধিকার কর্মী জাসবিন্দর সাংঘেরা অভিযোগ করেন, প্রায় ১২ বছর আগে তিনি লেস্টারের কাছ থেকে যৌন নিপীড়নের শিকার হন। এই ঘটনা তাকে ভীষণভাবে বিধ্বস্ত করলেও কাউকে জানাতে সাহস পাননি। কারণ তিনি জানতেন,  লেস্টার যে অবস্থানে আছেন, সেখানে কেউ তার অভিযোগ বিশ্বাস করবে না। ২০১৭ সালে যখন মি_টু ঝড় চারিদিকে, তখন তার মনে হলো এই কথাগুলো সবার জানা দরকার৷ তাই ২০১৭ সালে লেস্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেন তিনি।

জনপ্রিয় লেখক এবং কার্মা নির্ভানা চ্যারিটির প্রতিষ্ঠাতা সাংঘেরা অভিযোগ করেন, ১২ বছর আগে লেস্টার শুধু যৌন নিপীড়ন করেই তখন ক্ষান্ত হননি, সেই সাথে লেস্টার তাকে যৌন মিলনে লিপ্ত হতে বলছিলেন। আর সাংঘেরা যদি এই প্রস্তাবে রাজি না হন,তবে লেস্টার তার ক্ষমতাবলে তার জীবনে অসহনীয় করে তুলবেন বলে হুমকিও দিয়েছিলেন।

সেদিনের ঘটনার বিবরণ থেকে জানা যায়, সেই সময় নারীদের জোরপূর্বক বিয়ের বিরুদ্ধে মূলত প্রচারণা চালাচ্ছিলেন নারী অধিকার কর্মী জাসবিন্দর সাংঘেরা। সে বিষয়ে আইনের খসড়া নিয়ে তিনি কাজ করতেন লেস্টারের সঙ্গে।  ঘটনার দিন পার্লামেন্টের বৈঠক শেষ হতে অনেক রাত হয়ে যাওয়ায় বাড়ি ফিরে যাওয়ার শেষ ট্রেনটি মিস করেন সাংঘেরা।

লেস্টার সেদিন গাড়ি করে সাংঘেরাকে বাসায় পৌঁছে দেয়ার কথা বললে, গাড়িতে উঠে সাংঘেরা। গাড়ি চালাচ্ছিলেন ড্রাইভার আর পিছনের সিটে তারা দুইজন। উঠার পর থেকে সাংঘেরার স্পর্শকাতর অংশে হাত দিতে থাকেন লেস্টার। প্রতিবাদ করেও কোন লাভ হয়নি। পরে বাড়ি পৌঁছে না দিয়ে নিজের বাসায় নিয়ে আসেন লেস্টার। বাসায় লেস্টারের স্ত্রী ছিলেন। সকালে লেস্টারের স্ত্রী অফিসে চলে যাওয়ার পর তার সঙ্গে বিছানায় যাওয়ার আমন্ত্রন জানান লেস্টার। বিনিময়ে ‘ব্যারোনেস' বানিয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখান। আর সাংঘের যদি সায় না দেন, তবে হাউজ অফ লর্ডসে যাতে কোনোদিন সাংঘেরা আসন না পান, সে বিষয়ে হুমকি দেন লেস্টার। 

এদিকে, স্বতন্ত্র তদন্তের পর তদন্ত কমিটি একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। যেখানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। যদি বর্তমানে ৮২ বছর বয়স্ক লেস্টার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।  ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত তাকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পার্লামেন্টারি কমিটি।  এত দীর্ঘ সময়ের জন্য কাউকে অব্যাহতি দেয়ার ঘটনা আধুনিক ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ইতিহাসে এই প্রথম।

উল্লেখ্য,  যৌন হয়রানির ঘটনা নির্ভয়ে বলার লক্ষ্যে কর্মীদের জন্য গত ১৩ নভেম্বর থেকে ব্রিটিশ আইনপ্রণেতারা আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।

সূত্র: ডয়েছে ভেলে  

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত