'ধর্ম দিয়ে নয়, মানুষ হিসেবে দেখতে চেয়েছি'
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০১৬, ২১:২৮
ভারতে যখন গোমাংস ভক্ষণ নিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর কতিপয় হিন্দুদের নির্যাতনের কাহিনী সমালোচনার ঝড় তুলেছে দেশে, তখন অনন্য এক মানবিকতা ও অসাম্প্রদায়িকতার নজির সৃষ্টি করলেন দেশটির এক মুসলিম নারী।
শামসাদ বেগম নামে ঐ মুসলিম নারীর দেওয়া কিডনি এই পৃথিবীতে বাঁচিয়ে রাখতে যাচ্ছে ভারতের মহারাষ্ট্রের আরতি নামে এক নারীকে। শনিবার টাইমস অফ ইন্ডিয়া জানায়, ৩৮ বছর বয়সী আরতিকে ৪০ বছরের শামসাদ এর নিজের দেহের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ দানের এই খবর।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শামসাদ কিডনি দানের ইচ্ছাপত্রসহ যাবতীয় নথিপত্র ফতেহপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগে জমা দিয়েছেন। এখন সরকারের অঙ্গদান অনুমোদন কমিটির সায় পেলেই পরবর্তী কার্যক্রম চালাবেন চিকিৎকিৎসকরা।
১০ বছর আগে স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে ফতেহপুরের রাঢ়িবুজুর্গ গ্রামে বাবার বাড়িতে বাস করছেন শামসাদ। তার ছোট বোন থাকেন মহারাষ্ট্রের পুনেতে, সেখানে গিয়ে ছোট বোনের বান্ধবী আরতিকে দেখেন শামসাদ। আরতির দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এক বছর ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। তার ডায়লাইসিসি চলছে। এসব দেখে নিজের কিডনি দিয়ে বোনের বান্ধবীকে বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
শামসাদ বলেন, “তার (আরতি) শারীরিক যাতনা দেখে আমি আর থাকতে পারিনি, রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করিয়ে দেখি আমার আর তার রক্তের গ্রুপ একই। এখন আমি কিডনি দেওয়ার জন্য পুরোপুরি তৈরি।”
তিনি বলেন, “ধর্ম দিয়ে নয়, মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখতে চেয়েছি, তাই একজন মানুষের জন্য আমার এই ত্যাগ”।
মেয়ের সিদ্ধান্তে কোনো আপত্তি করেননি শামসাদের বাবা জাকির খান। তিনি বলেন, সব প্রক্রিয়াই সারা হয়েছে। দুই পরিবারও রাজি, এখন সরকারি কমিটির অনুমোদন পেলেই হয়।
ফতেহপুরের জেলার প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. বিনয় কুমার বলেছেন, তারা শামসাদ বেগমের সব কাগজপত্র স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কমিটিতে পাঠিয়েছেন, এখন অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছেন।