বেতনবৈষম্যের প্রতিবাদে বিবিসি থেকে পদত্যাগ
প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০১৮, ২০:৫২
৩০ বছর ধরে বিবিসিতে কর্মরত থেকে অবশেষে পুরুষ সহকর্মীদের তুলনায় বেতন কম পাওয়ার প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন বিবিসি চীন সম্পাদক ক্যারি গ্রাসিয়া। পদত্যাগের পর নিজ ব্লগে পোস্ট করা এক খোলা চিঠিতে বিবিসিতে ‘গোপন ও অনৈতিক বেতন সংস্কৃতি’ রয়েছে বলে মন্তব্য করেন।
আজ ৮ জানুয়ারি (সোমবার) দুপুরে বিবিসি অনলাইন এই সংবাদ প্রচার করলেও বিবিসি দাবি করেছে, এই ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনায় নারীর প্রতি কোনো বৈষম্য দেখানো হয়নি।
এর আগে গত জুলাই মাসে প্রতিষ্ঠানে বছরে দেড় লাখ পাউন্ডের বেশি বেতন পান—এমন কর্মীদের তথ্য প্রকাশ করতে বাধ্য হয় বিবিসি।
ক্যারি জানান, ওই তথ্য প্রকাশ পাওয়ার পর তিনি দেখতে পান, আন্তর্জাতিক চার সম্পাদকের মধ্যে দুজন নারী সম্পাদকের চেয়ে দুজন পুরুষ সম্পাদক ৫০ শতাংশের বেশি বেতন পান। বিবিসি যুক্তরাষ্ট্র সম্পাদক জন সোপেলের বেতন বছরে দুই থেকে আড়াই লাখ পাউন্ডের (আনুমানিক ২ কোটি ২৫ লাখ থেকে ২ কোটি ৮১ লাখ টাকা) মধ্যে। আর বিবিসি মধ্যপ্রাচ্য সম্পাদক জেরেমি বোয়েনের বেতন দেড় থেকে দুই লাখ পাউন্ডের মধ্যে।
খোলা চিঠিতে চীন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ক্যারি গ্রাসিয়া লিখেছেন, বছরে দেড় লাখ পাউন্ডের (প্রায় ১ কোটি ৬৮ লাখ ৭৩ হাজার টাকা) বেশি বেতন পাওয়া কর্মীদের তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর বিবিসি এখন ‘আস্থার সংকট’-এ ভুগছে।
নারী পুরুষ নির্বিশেষে চারজন আন্তর্জাতিক সম্পাদককে সমান পরিমাণ বেতন দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সমতা আইন ২০১০ অনুসারে, সমান কাজের জন্য নারী-পুরুষ সমপরিমাণ অর্থ পাবেন। আমি অনেক ভালো বেতন পাই। এরপরও আমি চাই, বিবিসি আইন মেনে চলুক এবং নারী-পুরুষের সমতার বিষয়টিকে মূল্যায়ন করুক।’
তবে ক্যারি জানান, গত সপ্তাহে তিনি বিবিসি চীনের সম্পাদক পদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিলেও তিনি এখনো বিবিসির সঙ্গে আছেন। টিভির নিউজরুমে তিনি তার আগের পদে ফিরে যেতে পারেন। সেখানে তার বেতন-সমতা থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এদিকে ক্যারি গ্রাসিয়ার পদত্যাগের খবর প্রচার হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই তাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বিবিসি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ন্যায্য বেতন বিবিসির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নারী-পুরুষের বেতনের ক্ষেত্রে বিবিসি অন্য প্রতিষ্ঠানের চেয়ে অনেক ভালো করছে। এই ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনায় নারীর প্রতি কোনো বৈষম্য দেখানো হয়নি।