অবিবাহিত প্রমাণ করতে সাত বছর!
প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০১৭, ১৩:৫১
পাকিস্তানের লাহোরের পারিবারিক আদালত অভিনেত্রী মীরাকে এবার বিয়ের অনুমতি দিয়েছেন। বিচারক বাবর নাদিম বলেন, ‘বিয়ের কাবিননামা জাল না সঠিক, তা বিচারযোগ্য। কিন্তু পারিবারিক আদালত আইনে মীরাকে বিয়ে করা থেকে কেউ আটকাতে পারবে না।’ আর এই রায়ের পর মীরা বললেন, ‘অবশেষে বিচার পেয়েছি।’
ঘটনাটি ২০০৯ সালের। পাকিস্তানের অভিনেত্রী ইরতিজা রুবাব মীরাকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করেন ফৈসলাবাদের ব্যবসায়ী আতিক-উর-রহমান। শুধু তা-ই নয়, আদালতে মামলা দায়ের করেন। তিনি দাবি করেন, ২০০৭ সালে ছোট আকারে তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছিল। কিন্তু মীরা কোনো দিন প্রকাশ্যে তাকে স্বামী বলে স্বীকার করেননি। বিয়ের ব্যাপারটি গোপন রেখে মীরা সবার কাছে নিজেকে অবিবাহিত বলে প্রচার করেছেন। প্রমাণ হিসেবে আদালতে বিয়ের কাবিননামা দাখিল করেন আতিক-উর-রহমান। লাহোর হাইকোর্টে তিনি মীরার কুমারীত্ব পরীক্ষা করার জন্য আবেদন করেন। এই আবেদনে তিনি আরও উল্লেখ করেন, মীরার সঙ্গে যেন তার বিবাহবিচ্ছেদ না হয়। আর মীরার বিদেশভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ারও আবেদন করেন।
এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মীরা বারবার বলেছেন, আতিক মানসিকভাবে অসুস্থ। তিনি প্রচার পাওয়ার জন্য এসব বলছেন। এক বন্ধুর মাধ্যমে আতিকের সঙ্গে তার পরিচয়। আতিক ইভেন্ট আয়োজনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ওই সময় আতিকের কয়েকটি ইভেন্টে অংশ নিয়েছেন তিনি। আর আতিকের দেখানো বিয়ের কাবিননামাকে তিনি ‘জাল’ বলেছেন।
বিবিসিকে মীরার আইনজীবী বালাক শের খোসা বলেন, মীরার কুমারীত্ব পরীক্ষার যে আবেদন আতিক-উর-রহমান করেছিলেন, সেটি লাহোর হাইকোর্ট পরে খারিজ করে দেন।
এদিকে পেরিয়ে গেছে সাত বছর। দেশটির প্রচলিত আইন অনুযায়ী এই মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মীরা বিয়ে করতে পারবেন না। বিষয়টিতে হতাশ এই অভিনেত্রী সম্প্রতি বলেন, ‘আমি বিয়ে করতে চাই। সন্তানের মা হতে চাই। সময় চলে যাচ্ছে, কিন্তু...। এভাবে আদালতে লড়তে লড়তে আমি ক্লান্ত। আমার কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি।’
পাকিস্তানের চলচ্চিত্রজগতের পরিচিত মুখ মীরা। দেশের গণ্ডি পার করে বলিউডেও অভিনয় করেছেন ৪০ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী। রাজনীতিতে নামার ইচ্ছা আছে তার। মীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বেশ সক্রিয়। নিত্যনতুন নিজের নানা ঢঙের ভিডিও প্রকাশ করে আলোচনায় থাকেন তিনি।
পাকিস্তানে বিয়ের ভুয়া কাবিননামা বের করা কোনো বিষয়ই না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ছেলেরা এ ধরনের মামলা করে, যাতে অভিযুক্ত মেয়ে আর বিয়ে করতে না পারে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রায় মেয়েদের পক্ষে যায়। কিন্তু রায় ঘোষণা হতে হতে তত দিনে মেয়েটির বয়স বেড়ে যায়। আবার তারকাদের মধ্যেও বিয়ে গোপন করার প্রবণতা আছে, বিশেষ করে অভিনেত্রীদের মধ্যে। তারা মনে করেন, বিয়ে তার ক্যারিয়ারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। কমে যেতে পারে দর্শক চাহিদা। তারকাখ্যাতি কমে যাওয়ার আশঙ্কা তাদের তাড়িয়ে বেড়ায়।