হিন্দুরীতি মেনে বৃদ্ধের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া করলেন মুসলিম কন্যা

প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০১৬, ১১:২৩

জাগরণীয়া ডেস্ক

একদিকে চলছে ধর্মের নামে হানাহানি, অন্যদিকে চলছে ধর্মের ভেদাভেদ প্রাণের স্পন্দন। ধর্মের সংজ্ঞা এক একজনের কাছে এক এক রকম। কেউ ধর্ম ব্যবহার করে মানুষ হত্যায়, আর কেউ ধর্মকে ব্যবহার করে প্রেমে-ভালবাসায়। 

ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে মনুষ্যত্বের জয় খুব কমই দেখা যায় বর্তমান যুগে এসে। চারিদিকে শুধু ধর্মের নামে মানুষ হত্যা-ধ্বংস। কিন্তু ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের ওয়ারঙ্গল জেলার ইয়াকুব বাই, যিনি ধর্মের নামে সৃষ্টি করেছেন আরো মহৎ এক দৃষ্টান্ত।

ইয়াকুব বাই একজন ইসলাম ধর্মালম্বী নারী। স্বামীকে নিয়ে চালান বৃদ্ধাশ্রম। বিনা অর্থে আশ্রয় দেন, সেবা করেন নিরাশ্রয় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের। বর্তমানে তাঁর বৃদ্ধাশ্রমে প্রায় ৭০ জন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা থাকেন।

দু’বছর আগে একটি বাস স্টপের কাছ থেকে শ্রীনিবাসন নামে ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধকে প্যারালাইজড অবস্থায় উদ্ধার করেন ইয়াকুব। পরে বৃদ্ধের কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে যোগাযোগ করা শ্রীনিবাসনের ছেলের সাথে। কিন্তু অসুস্থ পিতাকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাননি তাঁর ছেলে।

অগত্যা ইয়াকুব এ বৃদ্ধাশ্রমেই ওই বৃদ্ধ ব্যক্তির সেবা করেন বৃদ্ধের কন্যার মতো। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) রাতে সেই বৃদ্ধাশ্রমেই মারা যান শ্রীনিবাসন।

শ্রীনিবাসনের মৃত্যুর পর ফের তাঁর ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু বৃদ্ধের ছেলে জানান, সম্প্রতি তিনি হিন্দু ধর্ম থেকে খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছেন। তাই তিনি তাঁর বাবার সৎকার করতে রাজি নন।

তবে কে করবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া? কিন্তু এদিকে তো দেরি হলে সমস্যা। এমতাবস্থায় বৃদ্ধের সৎকারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন ইয়াকুব বাই।

সকল হিন্দুরীতি মেনে বৃদ্ধ শ্রীনিবাসনকে পিতা মেনে তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করেন এ নারী। ধর্মের অমনুষ্যত্ব এখানে স্থান পায়নি। স্থাপিত হয়েছে মানুষে মানুষে ভালোবাসা। 

সূত্র: আনন্দবাজার

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত