প্রভাবশালী ছয় নারী মিলিয়নিয়ার
প্রকাশ : ০৮ মে ২০১৭, ১৫:২৯
নারীরা যে ধনকুবের বা মিলিয়নিয়ার হতে পারেন, তা কি আপনি ধারণা করতে পারেন? আপনি বলবেন, হ্যাঁ অবশ্যই হতে পারে। আপনার সোজাসাপ্টা উত্তর স্বামীর অঢেল সম্পত্তি আর তা না হলে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া মোটা অংকের অর্থবিত্ত। আসলে কিন্তু এই দুই সীমাবদ্ধ ক্ষেত্র ছাড়াও নারীরা মিলিয়নিয়ার হতে পারে। বিশ্বাস হচ্ছে না! বর্তমানে নারীরা ব্যবসা-বাণিজ্য সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে পুরুষদের চেয়ে কোনো অংশে কম যান না, ক্ষেত্রবিশেষে এগিয়েও আছেন। জীবনে অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়ে তাঁরা আজকে এ অবস্থানে এসেছেন। এমনকি জনহিতকর কর্মকাণ্ডেও নিয়োজিত রয়েছেন। এরকমই ছয়জন মিলিয়নিয়ার ও প্রভাবশালী নারীর কথা আসুন জেনে নিই।
(১) অপরাহ উইনফ্রে
অপরাহ উইনফ্রে বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী, ধনী ও কৃষাঙ্গ উপস্থাপক। তাঁর বিশ্বখ্যাতি স্বপরিচালিত দ্য অপরাহ উইনফ্রে শোর জন্য। আমেরিকার মিসিসিপিতে ১৯৫৪ সালের ২৯ জানুয়ারি নিভৃত পল্লীতে এক অবিবাহিত মায়ের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। পরে বেড়ে উঠেছেন আরও উত্তরের শহর মিলওয়াকিতে। তিনি নয় বছর বয়সে ধর্ষিত হন এবং চৌদ্দ বছর বয়সে এক পুত্র সন্তান জন্ম দেন। তবে শিশুটি জন্মের কিছুদিন পর মারা যায়। তার বাবার কাছে থাকাকালীন অপরাহ হাইস্কুলে পড়ার ফাঁকে টেনিসির একটি স্থানীয় রেডিওতে চাকুরি পেয়ে যান। তখন তার বাবা টেনিসি রাজ্যে নরসুন্দর হিসেবে কাজ করতেন। মাত্র উনিশ বছর বয়সে সেখানে অপরাহ তার রেডিও পেশা শুরু করেন স্থানীয় সান্ধ্যকালীন খবর উপস্থাপনার মাধ্যমে। পরে অবশ্য তাকে উপস্থিত বক্তব্যে পারদর্শিতা দেখে দিবাকালীন টক শো' উপস্থাপন করতে দেয়া হয়। শিকাগোর একটি স্থানীয় রেডিওর তৃতীয় সারির একটি টক শো' যখন অপরাহর হাত ধরে প্রথম সারিতে জায়গা করে নিল এরপর আর তাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয় নি।সাফল্য এসেছে দু,হাত ভরে।পেয়েছেন সম্মান আর অর্থবিত্ত।বিশ্বে প্রভাবশালী মহিলাদের মধ্যে তিনি একজন।
(২) কোকো শ্যানেল
কোকো শ্যানেল একজন বিশ্ববিখ্যাত ফরাসি ফ্যাশন ডিজাইনার।বিশ্বের নামী দামী ব্র্যান্ড গুলোর একটি হচ্ছে Chanel।মুলত এই ব্র্যান্ডটি পারফিউমের জন্যই খ্যাতি লাভ করে এবং পরবর্তীতে মেক-আপ, ড্রেস, আকর্ষণীয় জুয়েলারি কালেকশন ইত্যাদিতেও সমান পরিমাণে খ্যাতি পায়। কোকো চ্যানেল ১৯০৯ সালে এই ব্র্যান্ডটি প্রতিষ্ঠা করে। এই ব্র্যান্ডের বিশ্ব বিখ্যাত পারফিউমের একটি হচ্ছে দ্যা সিগনেচার ফ্র্যাগ্রেন্স শ্যানেল নাম্বার ৫। কোকো শ্যানেল ১৮৮৩ সালে ফ্রান্সে জন্মগ্রহন করেন এবং মাত্র ১২ বছর বয়সেই তার মা মারা যায়।তিনি তার পিতার সাথে বিভিন্ন জুয়েলারী দ্রব্যের হকারী করতেন।এরপর তার বাবা তাকে একটি অনাথ আশ্রমে রেখে আসেন।অনাথ আশ্রম থেকে বের হয়ে তিনি এই ব্যবসাটাকেই বেছে নেন।
(৩) শ্যামা কাবানি
শ্যামা কাবানি মার্কেটিং জেন গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠাতা।১৯৮৫ সালে ভারতের গোয়াতে জন্মগ্রহণ করেন।পড়াশুনা করেছেন টেক্সাসের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। কাবানি ২০০৯ সালে ডালাস ও টিক্স ভিত্তিক একটি স্যোসাল মিডিয়া কন্স্যালটিং এ মাত্র ১৫০০ ডলার বিনিয়োগ করেন।এরপর তিনি হয়ে যান একজন লেখন,পাবলিক স্পিকার ও ওয়েব ব্যক্তিত্ব।
(৪) এরিয়ানা হাফিংটন
সেলফ মেইড বিলিয়নেয়ার বলতে যা বোঝায় এথেন্স এর নারী সম্পাদক এরিয়ানা হাফিংটন ঠিক এমনই একজন।বিশ্ববিখ্যাত অনলাইন পত্রিকা হাফিংটন পোস্ট প্রতিষ্ঠাতা এরিয়ানা হাফিংটন।এথেন্স, গ্রীসের এথেন্স এ জন্মগ্রহণ করেন।তবে একজন ধারাভাষ্যকার হিসেবে তিনি নিজের কারিয়ার শুরু করে ছিলেন।
(৫) জে কে রাউলিং
বিশ্ববিখ্যাত শিশুতোষ কল্পবিজ্ঞান সিরিজ হ্যারি পর্টার রচনার পূর্বে যে কে রাউলিং ছিলেন একজন তালাকপ্রাপ্তা মহিলা,যাকে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হয়েছে নিজের সংসার চালাতে। আর সংসারের ব্যয় নির্বাহের জন্য নির্ভর করতে হতো সরকারী সাহায্যের উপর। কিন্তু হ্যারি পর্টার এর সাফল্য তাকে এনে দেয় রাতারাতি সাফল্য।এখন তিনি বিশ্বের একজন প্রভাবশালী মহিলার একজন।বেশ কয়েকটি দাতব্য সংস্থায় অর্থব্যয় করেন।
(৬) মাদার ওয়াকার
আমেরিকার প্রথম কৃঞ্চাঙ্গ মিলিনিয়র হিসেবে ইতিহাসে যিনি স্থান করে আছেন তিনি মাদাম ওয়াকার।তিনি ছিলেন একজন বিশ্ববিখ্যাত উদ্যোক্তা।তিনি স্ক্লেপ রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে মাথার চুল হারিয়েছিলেন। এর পর তিনি Madam C.J. Walker Manufacturing Company প্রতিষ্ঠা করেন। যেখানে কৃঞ্চাঙ্গ মহিলাদের চুলের সৌন্দর্য উপকরণ তৈরি করা হতো। তিনি ১৮৬৭ সালে আমেরিকার একটি গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। শৈশবকালেই তার পিতা-মাতা তাকে বিক্রি করেন দিয়েছিলেন।