কোটার শূণ্যপদ মেধা তালিকা থেকে পূরণের সিদ্ধান্ত
প্রকাশ : ০৭ মার্চ ২০১৮, ১৪:২৩
কোটার কোনো পদ যোগ্য প্রার্থীর অভাবে পূরণ করা সম্ভব না হলে সেসব পদ মেধা তালিকার শীর্ষে থাকা প্রার্থীদের দিয়ে পূরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সব সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে এটি মেনে চলা হবে বলে এক আদেশে জানানো হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছে, সিনিয়র স্টাফ নার্স- এর ৪০০০ এবং মিডওয়াইফ-এর ৬০০ পদ পূরণের জন্য জনপ্রশাসন ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১০ তারিখের ৫৯ নম্বর সার্কুলারে উল্লেখিত মুক্তিযোদ্ধা কোটা অনুসরণ সংক্রান্ত নির্দেশনা শিথিল করিয়া ওই পদগুলো জাতীয় মেধা তালিকার শীর্ষে অবস্থানকারী প্রার্থীদের দ্বারা পূরণ করা হবে। এটা এককালীন না হয়ে সব সময় প্রযোজ্য হবে।
২০১০ সালের একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মুক্তিযোদ্ধা কোটার শর্ত শিথিল করে এখন থেকে অন্যসব সরাসরি নিয়োগে সব কোটার ক্ষেত্রে শূন্যপদে মেধাবীদের নিয়োগের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
কোটার প্রার্থী না পাওয়া গেলে ওই আদেশে শীর্ষ মেধাবীদের নিয়োগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়, ‘সকল সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটার কোনো পদ যোগ্য প্রার্থীর অভাবে পূরণ করা সম্ভব না হইলে সে সেকল পদ মেধা তালিকার শীর্ষে অবস্থানকারী প্রার্থীদের মধ্য হইতে পূরণ করিতে হইবে।’
৬ মার্চ (মঙ্গলবার) স্বাক্ষর করা আদেশটি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব, সরকারি কর্ম কমিশন সচিব, মহা-হিসাব নিরীক্ষা ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, বাঙ্গাদেশের সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা দীর্ঘদিনের। ১৯৭২ সালের ৫ নভেম্বর এক নির্বাহী আদেশে সরকারি, আধাসরকারি, প্রতিরক্ষা ও জাতীয়করণ করা প্রতিষ্ঠানে জেলা ও জনসংখ্যার ভিত্তিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং ১০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের জন্য কোটা পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে এই কোটা পদ্ধতির সংস্কার, পরিমার্জন ও পরিবর্তন করেছে সরকার।
বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনি ৩০ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, পিছিয়ে পড়া জেলাগুলোর জন্য কোটা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ৫ শতাংশ কোটা পদ্ধতি সংরক্ষিত। সব মিলিয়ে কোটা রয়েছে ৫৬ শতাংশ।
সরকারি চাকরিতে আবেদন করেও মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছে শুধুমাত্র কোটা ব্যবস্থার শূণ্যপদ মেধা তালিকা থেকে পূরণ না করায়-এমনই অভিযোগে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। সম্প্রতি কোটা পদ্ধতি সংস্কারের জন্য একটি রিট আবেদন করলেও সেটি খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। অবশেষে কোটার শূন্য পদ মেধাবীদের দ্বারা পূরণের এ সিদ্ধান্ত চাকরিপ্রার্থী-বেকারদের জন্য সুখবরই বলা চলে।