‘একদিন বিশ্বমানের প্রতিযোগী হবে দেশের সাঁতারুরা’
প্রকাশ : ২৫ মে ২০১৭, ২২:৪০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, বাংলাদেশের সাঁতারুরা সঠিক প্রশিক্ষণ এবং অনুশীলনের মাধ্যমে একদিন বিশ্বমানের প্রতিযোগী হিসেবে গড়ে উঠবে।
প্রধানমন্ত্রী ২৫ মে (বৃহস্পতিবার) সকালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদর দপ্তরের সুইমিংপুল কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘সেরা সাঁতারুর খোঁজে বাংলাদেশ’ শীর্ষক ‘সুইমার ট্যালেন্ট হান্ট’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী ‘সুইমার ট্যালেন্ট হান্ট’ অনুষ্ঠানের চূড়ান্ত রাউন্ডের প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন এবং বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।
নদীমাতৃক বাংলাদেশে সাঁতার একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় খেলা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সাঁতার প্রতিযোগিতাও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। তারই নিদর্শন আজকের এ প্রতিযোগিতায় খুদে সাঁতারুদের মেধার প্রতিফলন।
সরকার দেশের ক্রীড়া উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে আমাদের খুদে সাঁতারুদের যে নৈপুণ্য দেখলাম, তাতে আমি অত্যন্ত আশাবাদী। এখান থেকেই একদিন আমাদের বিশ্বমানের প্রতিযোগী উঠে আসবে।’
‘একসময় বাংলাদেশেরই মানুষ ব্রজেন দাস ইংলিশ চ্যানেল পার হয়েছিলেন। কাজেই আমরা যে পারি, সেটা আসলে আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
সরকার প্রধান বলেন, ‘আমি এইটুকু চাই বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের জনগণ বিশ্বসভায় একটা মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হোক। তাই সর্বক্ষেত্রেই আমাদের ছেলেমেয়েদের যে মেধা আছে, সেই মেধা বিকাশের সুযোগ করে দিতে হবে।’
নৌবাহিনীর প্রধান এবং বাংলাদেশ সাঁতার ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডমিরাল নিজাম উদ্দিন আহমেদ ও সাঁতার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এমবি সাইফ মোল্লা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ আহসান রাসেলসহ মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর প্রধানসহ ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা এবং সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন বয়সভিত্তিক শ্রেষ্ঠ আটজন ক্রীড়াবিদের প্রত্যেককে খেলাধুলায় আরো উন্নতি সাধনের জন্য পাঁচ লাখ টাকা করে চেক প্রদান করেন।
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা প্রতিভাবান সাঁতারুদের খুঁজে বের করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশেনের উদ্যোগে ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সহযোগিতায় ২০১৬ সালের ১৯ মে ‘সেরা সাঁতারুর খোঁজে বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতা শুরু হয়।
প্রথম পর্বে সমগ্র বাংলাদেশের ৬৪ জেলার ও ৪৮৯টি উপজেলা থেকে ২৫ হাজার সাঁতারু অংশগ্রহণ করে। এদের মধ্যে দ্বিতীয় পর্বের জন্য এক হাজার ২৭৫ জন নির্বাচিত হয়। পরে এক হাজার ২৭৫ জনকে ঢাকায় এনে পুনরায় তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ১৬০ জনকে নির্বাচিত করা হয়। শেষ পর্বে বাংলাদেশে সুইমিং ফেডারেশনের তত্ত্বাবধানে এই সাঁতারুদের তিন মাস নিবিড় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এদের মধ্যে থেকে নির্বাচিত হয় সেরা ৬০ জন সাঁতারু।
এই কৃতী সাঁতারুদের জন্য লেখাপড়াসহ দেশে-বিদেশে তিন বছরব্যাপী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী নিউজিল্যান্ডকে পাঁচ উইকেটে পরাজিত করে বাংলাদেশের ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে ছয় নম্বরে উঠে আসায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় ও সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশ একদিন ক্রিকেটে বিশ্বকাপও জয় করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।