শিরোপা আছে, সাবিনা শুধু নেই!
প্রকাশ : ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৫:০৩
কলসিন্দুরের মাঠ, ভোরের অনুশীলন, অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন দলের বিজয় মিছিল, আড্ডা, শীতের পিঠা-কোন কিছুতেই আর সাবিনাকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাই শিরোপা জেতা এই ফুটবলাররা কলসিন্দুর ফিরেই খুঁজে বেড়াচ্ছে সাবিনার স্মৃতি।
সাবিনা ইয়াসমিন- কলসিন্দুরের নারী ফুটবল দলের অনন্য এক নাম। গত ২৬ সেপ্টেম্বর জ্বরে ভোগে অকালে হারিয়ে গেছে সাবিনা। আর এই সাবিনাকেই আজ সবচেয়ে বেশি মনে করছে অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন দলের মারিয়া মান্দা, তহুরা খাতুন, শামসুন্নাহারদের। চ্যাম্পিয়ন দলের আট মেয়ের বাড়ি এই কলসিন্দুরে। এর মধ্যে সাবিনার সবচেয়ে নিকটতম বন্ধু তহুরা। বড় অভিমান তার সাবিনার উপর। কথা রাখেনি সাবিনা।
নেপালের বিপক্ষে ৬-০ গোলের জয়ের ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেছিল তহুরা। জয়ের উচ্ছ্বাস দেখানোর বদলে সাবিনাকে মনে করেছিল এই পেশাদারী ফুটবলার। এই ম্যাচে সাবিনারও থাকার কথা ছিল। প্রতিজ্ঞা করেছিল তহুরা সেদিন, ‘সাবিনা, তোর জন্য হলেও শিরোপা ছিনিয়ে আনব।’
ভারতকে ফাইনালে হারিয়ে শিরোপা নিয়ে এসেছে তহুরা। নেই শুধু সাবিনা। সেই পুতুল খেলার সঙ্গী থেকে স্কুলে যাওয়া, অনুশীলন সবই একসাথে ছিল সাবিনা আর তহুরার। সবাই বলত ‘মানিকজোড়’। এমনকি জ্বরে কাতর সাবিনার শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত ছিল তহুরা।
এ প্রসঙ্গে টলমল চোখে তহুরা বলে, সাবিনা যেদিন মারা গেল, সে রাতেও দুজন একসঙ্গে ঘুমিয়েছিলাম। দুই হাত দিয়ে আঁকড়ে ধরেও সাবিনাকে ধরে রাখতে পারেনি।
ফাইনালের গোলদাতা শামসুন্নাহারও স্মৃ্তিচারণ করে বললো বন্ধু সাবিনার কথা। ‘লাল-সবুজ জার্সি গায়ে দিয়ে যখন ফাইনাল গোলটা দিলাম, সবার আগে সাবিনার কথা মনে পড়েছে।’
এরই মধ্যে সাবিনা বাড়িতে উপস্থিত মারিয়া মান্দা, নাজমা। সবাইকে নিয়ে তহুরা গেলো সাবিনার কবরের পাশে। শিরোপাটা যে সাবিনাকে দেখাতেই হবে তহুরাকে!