ভাসমান আবর্জনা সরাতে জাপানের মহাকাশ যান
প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০১৬, ১১:৫১
পৃথিবীর কক্ষপথের ভাসমান আবর্জনা সরাতে পরীক্ষামূলকভাবে মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করেছে জাপান।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরের তেনেগাশিমা মহাকাশযান উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে।
মহাকাশযানটি একটি স্বয়ংক্রিয় কার্গো। এটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সারস পাখি’ বা জাপানি ভাষায় ‘কোনোতোরি’।
গবেষকরা বলছে, পৃথিবীর কক্ষপথের বিপুল পরিমাণ আবর্জনা সরাতে পরীক্ষামূলকভাবে এই স্বয়ংক্রিয় কার্গো মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করা হয়েছে।
দেশটির ১০৬ বছরের মাছের জাল প্রস্ততকারক প্রতিষ্ঠান নিত্তো সিমো কর্পোরেশন জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার সঙ্গে কাজ করেছে। ওই প্রতিষ্ঠান এই কার্গো মহাকাশযানটি বানাতে সহযোগিতা করেছে। খবর বিবিসি বাংলা।
গবেষকরা বলছে, কার্গো মহাকাশ যানটি অ্যালুমিনিয়াম এবং স্টিলের তার দিয়ে তৈরি। ৭০০ মিটার লম্বা একটি দড়ির সাহায্যে মহাকাশে থাকা আবর্জনার গতি স্তিমিত করে এ যানটি কক্ষপথ থেকে আবর্জনা সরিয়ে দেবে।
গবেষকরা জানিয়েছে, পাঁচ হাজারেরও বেশি মহাকাশ অভিযানে পৃথিবীর কক্ষপথে এক ধরনের জটলা সৃষ্টি হয়।
বিশেষ করে ১৯৫৭ সালে সোভিয়েত উৎক্ষেপিত প্রথম স্যাটেলাইট, স্পুৎনিক মহাকাশে পাঠানো হয়। এরপর গত ৫০ বছরে মহাকাশে ১০ কোটিরও বেশি নানাধরনের আবর্জনা জমা হয়। এসবের মধ্যে পুরনো স্যাটেলাইটের ফেলে দেওয়া যন্ত্রপাতি, রকেট বা স্যাটেলাইটের ছুটে যাওয়া বিভিন্ন ক্ষুদ্র অংশও রয়েছে।
এসব বস্তুর বেশির ভাগ পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘন্টায় ২৮,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত উচ্চগতিতে ছুটে চলছে। যা কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটের সঙ্গে সংঘর্ষের মাধ্যমে বিশ্বের টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
এছাড়া স্যাটেলাইটের মধ্যে সংঘর্ষ ও স্যাটেলাইট ধ্বংসকারী অস্ত্রের পরীক্ষার কারণে অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে।
গবেষকরা বলছেন, জাপানের তৈরি পরীক্ষামূলকভাবে মহাকাশে উৎক্ষেপিত কার্গোযানটি পিচ্ছিল এবং ইলেক্ট্রো ডায়নামিক দড়িটি কোন বস্তুকে কক্ষপথ থেকে সরিয়ে দেওয়ার মতো শক্তি উৎপাদন করবে। এরপর এসব আবর্জনাকে মহাকাশ কার্গোযানটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের দিকে ঠেলে দেবে। যার ফলে বস্তুটি সম্পূর্ণ পুড়ে ধ্বংস হয়ে যাবে।