জলঢাকায় উদ্ধারকৃত প্রত্নতত্ত্ব নিয়ে বির্তক
প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০১৭, ২৩:২৮
নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার ধর্মপাল ইউনিয়নের গড় ধর্মপাল এলাকায় প্রত্নতত্ব বিভাগের উদ্ধারকৃত সুলতানি আমলের (প্রায় আট’শ বছরের পুরানো) ৪২ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদের স্মৃতিচিহৃ নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সদস্যদের উদ্ধারকৃত সুলতানী আমলের কথিত মসজিদকে মানতে নারাজ জমির মালিকসহ এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়। তাদের দাবী এটি পাল বংশের কোন নিদর্শন। এ নিয়ে শুক্রবার দুপুরে খনন এলাকায় সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ হিন্দু জাতীয় মহাজোট জলঢাকা উপজেলা শাখা।
জমির মালিক ও সতীশ চন্দ্র রায়ের বড় ছেলে প্রমথ চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তরা বলেন, ওই এলাকায় পুর্ণাঙ্গ খনন কাজ শেষ করে পুনরায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সঠিক তথ্য উদঘাটন করতে হবে। গড় ধর্মপালে উদ্ধারকৃত বৌদ্ধ মন্দিরের ইট ও এখানকার ইট একই ধরনের। তাছাড়া এখান থেকে উদ্ধারকৃত শংঙ্খ, প্রদীপ, পুতুল, ঘড়ার ভাংগা অংশসহ বিভিন্ন নিদর্শন দেখে মনে হয় এসব পাল আমলের নিদর্শন।
বিগত ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের নভেম্বর মাসে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক নাহিদ সুলতানার নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি দল ধর্মপাল ইউনিয়নের গড় ধর্মপাল ও সতীশের ডাঙ্গায় খনন কাজ শুরু করে। এ সময় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ওই দল গড় ধর্মপাল এলাকায় পাল আমলের একটি বৌদ্ধ মন্দিরের সন্ধান পায়। এ ছাড়াও সতীশের ডাঙ্গায় খনন কাজ শুরু করার পর পর বর্ষা মৌসুমের প্রবল বর্ষণের কারণে খনন বন্ধ করে দেয়া হয়।
এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আবারও সতীশের ডাঙ্গায় খনন কাজ শুরু করলে ৩০টি পিলারসহ ছোট ছোট নিদর্শনের সন্ধান পায় খননকারী দল।
খনন কাজে নিয়োজিত পাহাড়পুর কাস্টোডিয়ান ছাদেকুজ্জামান জানান, আনুমানিক বারোশ’ খ্রীস্টাব্দের ২৪.৭৬ ও ২০.৫৭ মিটার পরিমাপের ৪২ গম্বুজ বিশিষ্ট ৩০টি পিলার ও পশ্চিম দিকে মেহেরাব এর সন্ধান পাওয়া গেছে। যা দেখে মনে হয় এটি সুলতানী আমলের একটি মসজিদের ভিত্তি। বাগেরহাটে ষাট গম্বুজ মসজিদ দেশের বড় প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন আর পরবর্তীতে যশোরে উদ্ধারকৃত বারোবাজার সাতগাছিয়া গায়েবানা মসজিদটি দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও সতীশের ডাঙ্গায় উদ্ধারকৃত ৪২ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি বর্তমানে দেশের দ্বিতীয় স্থানে থাকবে। এতে এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে আরও তদন্ত দল এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে।
রংপুর বিভাগীয় হিন্দু মহাজোটের সম্বনয়কারী পুলক চন্দ্র বসাক, রংপুর ক্ষত্রিয় সমিতি’র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নৃপেন্দ্র নাথ রায়, নীলফামারী জেলা হিন্দু মহাজোটের সম্বনয়কারী গৌতম চন্দ্র রায়, স্কুল শিক্ষক খোকা রাম রায় ও সতীশের ছোট ছেলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা বিধু ভূষন রায়, পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন জেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা সমাবেশে অংশ নেয়।