প্রতিরোধের মার্চ
১৯৭১ এর উত্তাল ১৮ মার্চ
প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০১৭, ১৫:২৪
একাত্তরের এই দিনেই বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত বাঙালি সৈনিকরা স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের কর্মীরা বাংলাদেশে অবসরপ্রাপ্ত সৈনিকদের স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে একাত্ম করতে বিভিন্ন স্থানে মতবিনিময় চালিয়ে যেতে থাকেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে সাধারণ মানুষ সামরিক প্রশিক্ষণের প্রস্তুতি নিতে থাকে। মহিলা পরিষদের মেয়েরাও পিছিয়ে ছিল না, তারা বিভিন্ন সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে থাকে।
এ দিন চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখে আগত ৪৩,০০০ টন গম বহনকারী আর একটি জাহাজ পাকিস্তানি সামরিক সরকার গতিপথ পরিবর্তন করে এবং জাহাজটি অজ্ঞাত গন্তব্যের দিকে চলে যায়।
সেনাবাহিনীর মোতায়েন বা তলবের এবং গুলিতে হতাহতের জন্য সামরিক সরকার কর্তৃক লোক দেখানো তদন্ত কমিশন বঙ্গবন্ধু প্রত্যাখ্যান করেন।
এদিকে গত ১৬ ও ১৭ মার্চ ইয়াহিয়ার সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও এদিন কোনো বৈঠক হয়নি। তবে ১৯ তারিখ পুনরায় তৃতীয় দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবনের শীর্ষে কালো পতাকা উত্তোলিত রেখে এবং অফিস-আদালতে যোগদানে বিরত থেকে বাংলাদেশের সব স্তরের মানুষ অসহযোগকে সফল করে তুলেছে।
স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এক বিবৃতিতে আমেরিকা, ব্রিটেন, রাশিয়া, চীন প্রভৃতি শক্তির প্রতি তাদের সরবরাহকৃত অস্ত্রের মাধ্যমে বাঙালি হত্যার অপচেষ্টা বন্ধ করার আবেদন জানায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ অপর এক বিবৃতিতে বিভিন্ন দেশের সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় এবং বুদ্ধিজীবীদের কাছে তারবার্তা প্রেরণ করে আসন্ন গণহত্যা ও যুদ্ধ থেকে পশ্চিম পাকিস্তানীদের নিবৃত্ত করার অনুরোধ জানান।
প্রচুর সংখ্যক দেশি-বিদেশী সাংবাদিকের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে আগত শপথদীপ্ত ছাত্রছাত্রী, যুবক-যুবতী, শিক্ষক, চিকিৎসক, সাংবাদিক, কর্মচারী, শ্রমিক, কৃষক, নার্স, ব্যবসায়ী, পেশাজীবীদের সংগঠনগুলো অসহযোগ আন্দোলনের প্রতি অকুণ্ঠ আস্থা জ্ঞাপনপূর্বক নেতার আশীর্বাদ কামনা করেন।