মেহেদীর রঙের সাথে মিশে গেলো রক্তের রঙ
প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০১৬, ২১:০০
মাত্র ১ মাস আগেই বিয়ে হয়েছে মেয়েটির। হাতের মেহেদির রঙ মুছে যাওয়ার আগেই রক্তের দাগ মিশে গেলো সেখানে। নতুন সংসারে স্বামীর সামনেই নির্মমভাবে খুন হন পারভীন জামাল রোজী; বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় ছেলে শেখ জামালের স্ত্রী।
গোলাপের মত সুশ্রী বলে জন্মের পর বঙ্গবন্ধুই নাম রেখেছিলেন রোজী। ১৭ বছর বয়সে মামাতো ভাই শেখ কামালের বিয়ের দিন বঙ্গবন্ধুই বলেন আমার জামালের জন্য বউ খুঁজতে দূরে যেতে হবে না। পরদিনই ছোট বোন লিলিকে ফোন করে বললেন তোমার রোজীকে আমি নিলাম। বঙ্গবন্ধুর ছোটবোন খাদেজা হোসেনের মেয়ে রোজীর বাবা সৈয়দ হোসেন ছিলেন তৎকালীন সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সচিব।
১৯৭৫ সালের ১৭ই জুলাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের মেঝ ছেলে শেখ জামালের সাথে বিয়ে হয় তার। পরম আদরে ছেলে আর তার নববধূকে আশীর্বাদ করেন বঙ্গবন্ধু। সেদিন পাশেই ছিল বিশ্বাসঘাতক খুনী মোশতাক। কে জানতো, ঐ ঘাতকের চক্রান্তে ঘর বাঁধার এই স্বপ্নযাত্রা এতটা দু:স্বপ্নের হয়ে উঠবে!
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের রাতে, ঘাতকদের বুলেট রেহাই দেয়নি রোজীকেও। ধানমন্ডি গার্লস স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে তখন বদরুন্নেসা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিলেন রোজী জামাল। ১৫ই আগস্ট ভোররাতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দোতলায় বঙ্গবন্ধুর শোবার ঘরে জামালের সামনেই হত্যা করা হয় রোজী জামালকে। অন্যান্যদের সাথে তাঁকেও নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির দ্বিতীয় তলায়। শেখ পরিবারে দুই বধূ এসেছিলেন তিন দিনের ব্যবধানে কিন্তু বিদায় নেন একই সাথে।