লিভার ভালো রাখতে যা খাবেন
প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০১৬, ১৪:৫২
‘লিভার’ (যকৃৎ) দেহের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আমাদের শরীরের বিপাকীয় কার্যাবলী লিভারই সম্পাদন করে। এই অঙ্গ থেকে নিসৃত জারক রসেই হজম হয় খাবার। যাদের লিভার দুর্বল, পেটে সারাবছর সমস্যা লেগেই থাকে তাদের। গবেষকের মতে, লিভারের রোগকে নীরব ঘাতক বলা হয়। কেননা লিভারের যেকোনো রোগ সাধারণত প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়ে না। রোগ বেড়ে গেলে প্রকাশ পায় এর লক্ষ্মণ। অনেক সময় আর কিছুই করার থাকে না তখন।
লিভারে সমস্যা দেখা দিলে ডান দিকের উপরের পেটের এলাকা জুড়ে ব্যথা অনুভব করবেন আপনি। অ্যাসিডিটি বেড়ে যাবে। ঘাম বাড়বে। হঠাৎ করে বেড়ে যেতে পারে ওজন। চোখ-মুখের বর্ণ পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। এছাড়া বারবার বমি হওয়া, ফ্যাকাসে মল, খাওয়ার পর মুখে তেতো ভাব, পিত্ত সমস্যা, চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়ার পর পেট ব্যথা, চোখের ওপরে ব্যথা, টানা অবসন্নতা, অর্শ্বরোগ এবং স্থায়ীভাবে বর্ধিত শিরাসহ আরও নানা ধরণের লক্ষণ প্রকাশ পায়।
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ, মদ্যপান, ধূমপান ইত্যাদি লিভারের প্রধান শত্রু। প্রাথমিকভাবে লিভারের সমস্যা ধরা পড়লে রাতে ঘুমানোর আগে কিছু খাবার এ রোগ থেকে সহজেই আপনাকে মুক্তি দিতে পারে। অথবা, যাদের লিভার সুস্থ আছে তারা কিছু খাবার নিয়মিত খেলে রোগব্যাধি থেকে দূরে থাকবে এ অঙ্গটি।
আসুন জেনে নিই কী সেই খাবার?
লেবু ও গরম পানি : অন্যান্য খাবারের তুলনায় কুসুম গরম পানিতে লেবু চিপে খাওয়ার অভ্যাস লিভারে অনেক বেশি এনজাইম উৎপাদনে সহায়তা করে, এছাড়াও ভিটামিন সি গ্লুটেথিয়ন নামক যে এনজাইম উৎপন্ন করে তা লিভারের ক্ষতিকর টক্সিন দূর করে লিভার পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে ১ গ্লাস কুসুম গরম পানিতে সামান্য লেবু চিপে পান করুন। এতে করে পরিষ্কার থাকবে লিভার।
সবুজ চা : সবুজ চায়ের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের দেহের ফ্রি সার্জিকেল টক্সিসিটি দূর করে এবং আমাদের লিভার পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে। প্রতিদিন ১-২ কাপ সবুজ চা পান করার ফলে লিভারে জমে থাকা টক্সিন দূর হয়ে যায় এবং পুরো দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে কাজ করতে সক্ষম হয়।
রসুন : রসুনে রয়েছে সালফারের উপাদান যা লিভারের এঞ্জাইমের সঠিক কাজে সহায়তা করে। এছাড়াও রসুনে রয়েছে অ্যালিসিন ও সেলেনিয়াম যা লিভার পরিষ্কারের পাশাপাশি লিভারের সুস্থতা নিশ্চিত করে। তাই খাবারে প্রতিদিন রসুন ব্যবহার করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
হলুদ : লিভারের সবচেয়ে পছন্দের খাদ্য উপাদান হলুদ। হলুদ একটি নিরাময় ওষুধ হিসেবে বিবেচিত। এলিভারের ডিটক্স এর পরিমাণ বৃদ্ধি করে, লিভারকে পরিষ্কার করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে সেইসঙ্গে আমাদের ইমিউন সিস্টেম এর জন্য ব্যবহার করা হয় হলুদ। এটা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে।
আপেল : পেক্টিন নামক এক প্রকার উপাদান রয়েছে আপেলে। যা শরীরের খারাপ উপাদানগুলো দূর করে ও পরিপাকতন্ত্রকে টক্সিনমুক্ত করে। লিভারকেও টক্সিনমুক্ত করার কারণে, লিভার সঠিকভাবে কাজ সম্পন্ন করতে পারে।
সবুজ শাকসবজি : লিভারকে পরিষ্কার ও সক্রিয় রাখার ক্ষেত্রে সব থেকে ভাল খাবার হল সবুজ শাকসবজি। সবুজ শাক রান্না করে বা জুস করে খেতে পারেন। এটিতে রক্তের টক্সিন মুক্ত রাখার উপাদান রয়েছে।