মুক্তামনির অস্ত্রোপচার সম্পন্ন, এখনো ঝুঁকিমুক্ত না
প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০১৭, ২২:০৯
বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার শিশু মুক্তামণির হাতে দ্বিতীয় দফায় অস্ত্রোপচার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে।
১২ আগস্ট (শনিবার) বেলা ১১টার হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের অপারেশন থিয়েটারে এ অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ইউনিটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন।
প্রেস ব্রিফিং এ ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, সকাল সোয়া ১১টা নাগাদ প্রাথমিক অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। দুই ঘণ্টার অস্ত্রোপচার শেষে মুক্তামণিকে বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে শিশুটিকে এখনো ঝুঁকিমুক্ত বলা যাবে না।
ড সামন্ত লাল সেন বলেন, মুক্তামণির অঙ্গচ্ছেদ করার প্রয়োজন না হলেও তার আরও অস্ত্রোপচার দরকার রয়েছে।
এর আগে, অস্ত্রোপচারের জন্য সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়।
এক সপ্তাহ আগে গত ৫ আগস্ট সকালে মুক্তামনির বায়োপসি করা হয়। ঢামেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্লাস্টিক সার্জন ও একই প্রতিষ্ঠানের অ্যানেসথেশিয়া বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎকরা এই অস্ত্রোপচারে অংশ নেন।
উল্লেখ্য, মুক্তামনি সাতক্ষীরার সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামের ইব্রাহিম হোসেনের মেয়ে। তার এখন ১২ বছর বয়স। ছয় মাস বয়সে তার ডান হাতে একটি গোটা দেখা দেয় এবং ধীরে ধীরে তা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে সেটি তার হাত থেকে বড় হয়ে যায়। ফলে চলাফেরা করতে সমস্যা দেখা দেয়। গত প্রায় তিন বছর ধরে সে বিছানায় ছিল।
গত মাসে সাতক্ষীরা থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মুক্তামনিকে সরকারি উদ্যোগে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গণমাধ্যমে এ খবর আসার পর সবাই মুক্তামনির রোগটির ব্যাপারে জানতে পারে। বিরল রোগে আক্রান্ত শিশুটির খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর সরকারের পক্ষ থেকে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসার খরচ বহনের কথা জানান।
মুক্তামনিকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকরা টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমের তার শরীরের পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রতিবেদন দেখেন এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা এ ধরনের জটিল অস্ত্রোপচারে করতে আগ্রহী নন বলে জানান। তখন ঢামেকের চিকিৎসকরাই সাহস করে মুক্তামনির অস্ত্রোপচারে এগিয়ে আসেন।