পাকিস্তানে বোমা নিষ্ক্রিয় দলে প্রথম নারী রাফিয়া
প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৪:৫৮
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখা প্রদেশটি জঙ্গি অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত। প্রায়ই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে থাকে এ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায়। আর এই ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলেই প্রথম নারী বোমা নিষ্ক্রিয় কর্মী হিসেবে যোগদান করেছেন ২৯ বছর বয়সী রাফিয়া কাসিম বেগ। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া।
সাত বছর আগে পাকিস্তানের পুলিশ বাহিনীতে কনস্টেবল পদে যোগ দিয়েছিলেন রাফিয়া।
পাকিস্তানের নওসেরা স্কুল অব এক্সপ্লোসিভ হ্যান্ডলিং-এ অন্য ৩১ জন পুরুষ সদস্যের সঙ্গে ১৫ দিনের প্রশিক্ষণ শেষে বোম্ব ডিজপোজাল ইউনিট(বিডিইউ)-এ যোগ দেবেন তিনি। প্রশিক্ষণে বোমার প্রকার, চিহ্নিতকরণের উপায় এবং নিষ্ক্রিয় করার পদ্ধতি শিখবেন রাফিয়া।
রাফিয়া জানান, একটি উচ্চ শিক্ষিত পরিবারে তার জন্ম। সাত বছর আগে পেশোয়ার দায়রা আদালতের কাছে একটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার পর থেকেই পুলিশ বাহিনীতে যোগ দিতে উৎসাহিত হন তিনি।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন রাফিয়া। এরপর তিনি অর্থনীতিতেও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন এবং একটি আন্তর্জাতিক উদ্ধার দলে কাজ করা শুরু করেন। এখানে কাজ করা অবস্থায় আইনে বিষয়ে আগ্রহ জন্মে তার। বর্তমানে এলএলবি-তে পড়াশুনা করছেন তিনি।
রাফিয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতার কারণে অনেক কোম্পানি এবং বেসরকারি সংস্থা চাকরির প্রস্তাব দিয়েছিল তাকে। কিন্তুজঙ্গি অধ্যুষিত খাইবার পাখতুনখা প্রদেশের পুলিশ বাহিনীতেই যোগদান করেন তিনি। এই এলাকায় প্রায়ই নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে।
পুলিশে যোগদানের পর তাকে পেশোয়ারের আদেজাই, মিচনি, সালমান খেল এলাকায় প্রশিক্ষণ নেয়ার জন্য বলা হয়। ঐ সময় 'রেড জোন' বা ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে ধরা হতো এসব অঞ্চলগুলোকে। এসব অঞ্চলে ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে ১০ দিন টহল অভিযানে অংশ নেন তিনি।
২০১০ সালে পেশোয়ারের লেডি রিডিং হাসপাতালের চিকিৎসক ইন্তিখাব আলমকে অপহরণের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে উদ্ধার করে পুলিশের একটি তদন্ত দল। ঐ তদন্ত দলের একমাত্র নারী সদস্য ছিলেন রাফিয়া।
রাফিয়া জানান, পুলিশের চাকরি শুধু একটি পেশা নয়, যারা দেশের জন্য কিছু করতে চায় তাদের জন্য এটি আবেগ ও প্রেরণা। খাইবার পাখতুনখা পুলিশ বিভাগে কেরানি থেকে শুরু করে ডেপুটি সুপারিডেন্টসহ বিভিন্ন পদে ৬০০ নারী চাকরি করেন।