পিয়াইন ও ডাউকি নদী রক্ষায় মানববন্ধন
প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০১৭, ০১:৪৬
জাফলং-এর পিয়াইন নদী অববাহিকার সোনাটিলায় পিয়াইন ও ডাউকি নদীর পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকায় পাথর উত্তোলন বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনের অবহেলা ও নির্লিপ্ততার প্রতিবাদে এক মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস উপলক্ষ্যে পাঁচদিন ব্যাপি কর্মসূচির অংশ হিসাবে ১৭ মার্চ, শুক্রবার বেলা ১১টায় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), সিলেট শাখা ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ সিলেটের উদ্যোগে এই মানববন্ধনে পাথর উত্তোলনকালে নিয়মিত শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয়। মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রথম আলো বন্ধুসভা সিলেট শাখা যুগ্ম-আয়োজক হিসাবে অংশগ্রহণ করে।
মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে প্রথম আলো বন্ধুসভা সিলেট শাখার সভাপতি মিজানুর রহমান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজকদের পক্ষ থেকে মূল বক্তব্যে বাপা সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক আব্দুল করিম কিম বলেন, "জাফলংকে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা বা ইকোলজিক্যালি ক্রিটিক্যাল এরিয়া ঘোষণার দীর্ঘদিন অতিবাহিত হয়েছে। সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষিত হওয়ার পর যেখানে শুশ্রুষার প্রয়োজন ছিল সেখানে পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যক্রম লাগাতারভাবে চলছে। পাহাড়-টিলা ধ্বংস, নদী বিনষ্ট এবং একের পর এক শ্রমিক ও পর্যটকের মৃত্যুতে জাফলং এখন শুধু পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা নয়, মানুষের জন্যও বিপদজনক এলাকায় পরিণত হয়েছে। এই পরিস্থিতি এক দিনে তৈরি হয়নি। দিনের পর দিন, বছরের পর বছর সিলেটের সীমান্ত এলাকার এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে নির্দয়ভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। কোটি কোটি টাকার পাথর উত্তোলনের মাধ্যমে এক সময়ের সবুজ ও নির্মল জাফলংকে ধূসর মরুময় করা হয়েছে। বোমা মেশিনের শব্দ, বালির স্তুপ, পাথর কোয়ারী নামের বিশাল বিশাল গর্ত, শত শত ট্রাকের গোঁ গোঁ শব্দে প্রকৃতির কোন নির্মলতা নেই। এখানে যা আছে তা প্রকৃতির সাথে মানুষের নির্মমতা"।
তিনি এই অপকর্ম প্রতিরোধে স্থানীয় প্রশাসনের অবহেলা ও নির্লিপ্ততাকে দায়ি করে বলেন, "সমাজে সব সময়ই দুর্বৃত্তপনা ছিল এবং থাকবে কিন্তু প্রশাসন আইনের বলে তা প্রতিরোধ করবে কিন্তু সিলেটের জাফলং সহ পাথর কোয়ারীগুলোর ধ্বংসলীলা দেখে বোঝা যায় এখানে না আছে আইন, না আছে প্রশাসন। তিনি, পাথর কোয়ারীতে কোন প্রকার নিরাপত্তা সামগ্রী না দিয়ে দরিদ্র শ্রমিকদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়ার কঠোর সমালোচনা করেন।
সমাবেশ থেকে জাফলং, ভোলাগঞ্জ, লোভাছড়া ও যাদুকাটা সহ সিলেট বিভাগের বিভিন্ন নদ-নদীকে পাথরখেকো চক্রের হাত থেকে রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীকে এসব অঞ্চল হেলিকপ্টার থেকে পরিদর্শন করার আহবান জানানো হয়। একইসাথে সাম্প্রতিক সময়ে পাথরকোয়ারিতে প্রায় ২০ জন শ্রমিকের মৃত্যুর বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করা হয়। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চার রাশেদা আখতার, সাংবাদিক প্রত্যুষ তালুকদার, পরিবেশকর্মী আনিস মাহমুদ, ব্যাংক কর্মকর্তা মোমেন মিয়া, প্রথম আলো বন্ধুসভা সিলেট শাখার সহ-সভাপতি গোলাম পাভেল রেজা, সাধারণ সম্পাদক শাহ সিকন্দর শাকির প্রমুখ।