পিঠে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার নিয়ে বঙ্গোপসাগরে ২ কচ্ছপ
প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৮:৫৩
পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত প্রায় ‘বাটাগুর বাসকা’ প্রজাতির কচ্ছপ। একথা মাথায় রেখেই বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে বিশ্বে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির কচ্ছপ বাটাগুর বাসকার সংরক্ষণ ও প্রজননের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করে চলেছে।
ইতোমধ্যেই এই প্রজনন কেন্দ্রে কচ্ছপ বাটাগুর বাসকার বেড়ে ওঠা, প্রজনন এবং ডিম পাড়ার জন্য তৈরি ও খনন করা হয়েছে একাধিক পুকুর, নালা, সেডসহ প্যান (কৃত্রিম পুকুর) ও ডিমপাড়া স্থান।
বর্তমানে এই প্রজনন কেন্দ্রে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির ১১৭টি কিশোর ও ১০টি বড় বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ রয়েছে। এরমধ্য থেকে সব থেকে বড় দুটি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপের পিঠে স্যাটালাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) ভাটার সময় ছেড়ে দেওয়া হয় সুন্দরবনের বঙ্গোপসাগর মোহনায়। পিঠে বসিয়ে দেয়া স্যাটালাইট ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে এখন সুদুর ইউরোপিয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ অষ্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় বসে এই কচ্ছপের জীবনাচরণের তথ্য ও ছবি স্পষ্ট দেখা যাবে।
গবেষণার মধ্য দিয়ে জানা যাবে বিশ্বের বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির এই কচ্ছপের স্বভাব, খাদ্য সংগ্রহ, বিচরণ, পরিবেশসহ বঙ্গোপসাগেরর গভীর না অগভীর পানিতে থাকতে পছন্দ করা সকল বিষয়।
করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, দুটি কচ্ছপ বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ অংশ ছেড়ে দেওয়া হলেও তারা ভারত ও শ্রীলংকা অংশে যায় কিনা তা জানা সম্ভব হবে। এখন থেকে দীর্ঘ এক বছর ধরে কচ্ছপটির গতিবিধি পর্যালোচনা করা হবে। পর্যলোচনা ও গবেষণা শেষে সুন্দরবন এবং বঙ্গোপসাগরে এ প্রজাতির কচ্ছপের আরও বাচ্চা অবমুক্ত করা হবে।
পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ তৌহিদুর রহমান জানান, বাংলাদেশের বন-বিভাগ, আমেরিকার টারটেল সারভাইভাল এলায়েন্স, অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা জু ও প্রকৃতি জীবন ফাউন্ডেশনের অর্থায়ানে সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের কুমির ও হরিণের পাশাপাশি ২০১৪ সালে গড়ে তোলা হয় বাটাগুর বাসকার কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্র।
বিশ্বে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির তালিকায় থাকা বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ করমজলে প্রজননের আগে বিশ্বের মধ্যে শুধুমাত্র সুন্দরবনসহ বাংলাদেশ ও ভারতে ছিল মাত্র ১০০ টির মতো। মাত্র ৩ বছরে সুন্দরবনের করমজলে প্রজননের মাধ্যমে এর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৭ টিতে।