না ফেরার দেশে অভিনেত্রী মায়া ঘোষ
প্রকাশ : ১৯ মে ২০১৯, ২৩:০৮
ক্যান্সারের কাছে হার মেনে অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেলেন অভিনেত্রী ও মুক্তিযোদ্ধা মায়া ঘোষ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
১৯ মে (রবিবার) সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটের দিকে যশোরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার পুত্র দীপক ঘোষ বলেন, ২০০০ সালে আমার মায়ের শরীরে প্রথম ক্যানসার ধরে পড়ে। ২০০১ সালের ফেব্রুয়ারিতে কলকাতার সরোজগুপ্ত ক্যানসার হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হয়। ২০০৯ সালের দিকে অনেকটা সুস্থ হয়ে ওঠেন। এরপর কিডনি, লিভার ও হাঁটুর সমস্যা দেখা দেয়। তারও চিকিৎসা চলছিল। ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে আবারও ক্যানসার ধরা পড়ে। পুনরায় কলকাতার সরোজগুপ্ত ক্যানসার হসপিটালে নেয়া হয় চলতি বছরের জানুয়ারিতে। তিন মাসেও সেখানে শারিরীক অবস্থার তেমন কোন উন্নতি হয়নি। তিনি দেশে ফেরার জন্য ব্যাকুল ছিলেন। একপর্যায়ে গত ১৫ এপ্রিল তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে যশোর কুইন্স হসপিটালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মায়া ঘোষ।
ছেলে দীপক ঘোষ আরও বললেন, মা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় কলকাতার শরণার্থীশিবিরে মুক্তিযোদ্ধাদের রেঁধে খাওয়ানোসহ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। তবে তাঁর সার্টিফিকেট ছিল না। এসব নিয়ে ভাবতেন না। বলতেন, দেশের প্রয়োজনে যুদ্ধ করেছি, সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য না।
অভিনেত্রী মায়া ঘোষের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে শিল্প ঐক্যজোটের সভাপতি ডিএ তায়েব ও সাধারণ সম্পাদক জিএম সৈকত বলেন, ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে চিকিৎসার খবর বাবদ ৫ লাখ পেয়েছিলেন অভিনেত্রী মায়া ঘোষ। গতবছরও প্রধানমন্ত্রী তাকে চিকিৎসার জন্য ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র করে দেন। শিল্পী ঐক্যজোটও তার পাশে ছিল। কিন্তু কোনোভাবে বাঁচানো গেল না মায়া ঘোষকে।
প্রসঙ্গত, ১৯৪৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর যশোরের মণিরামপুর উপজেলার প্রতাপকাটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মায়া ঘোষ। ১৯৮১ সালে ‘পাতাল বিজয়’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয় শুরু করেন তিনি। তিনি দুই শতাধিক সিনেমা ও নাটকে অভিনয় করেছেন। সর্বশেষ ২০১৬ সালে এটিএন বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘ডিবি’-তে অভিনয় করেছেন তিনি।