টাকা দিতে না পারায় শিক্ষকদের কটুক্তি, পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যা
প্রকাশ : ২৪ জুন ২০১৬, ১৭:০২
দারিদ্রতার কাছে হার মেনেছেন শিক্ষার্থী আসমা খাতুন (১৯)। ব্যবহারিক পরীক্ষা ফি দিতে না পেরে আত্মহত্যার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে তাকে।
ঝিনাইদহের শৈলকুপার শেখপাড়া দুঃখী মাহমুদ কলেজে ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি দিতে না পারায় শেখপাড়া ডি.এম. ডিগ্রী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী আসমা আত্মহত্যা করে। গত ১৭ জুন (শুক্রবার) বিকেল সাড়ে ৫টা সে মারা যায়। এর প্রতিবাদে জানিয়ে শিক্ষার্থীরা ঝিনাইদহ কুষ্টিয়া-মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।
ঝিনাইদহের শৈলকুপার ১নং ত্রিবেণী ইউনিয়নের বসন্তপুর পূর্বপাড়া গ্রামের আনসার মোল্লার ২ ছেলে ২ মেয়ের মধ্যে ছোট মেয়ে আসমা খাতুন শেখপাড়া ডি.এম.ডিগ্রী কলেজের মানবিক বিভাগের এইচএসসি ‘২০১৬’ পরীক্ষার্থী ছিল।
আসমার বাবা-মা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আসমা খাতুন ফরম ফিলাপের সময় সকল প্রকার ফি পরিশোধ করার পরও ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য বাড়তি ফি আদায় করেছেন কলেজের ভুগোল বিষয়ের শিক্ষক মোঃ হাফিজসহ কৃষিশিক্ষা, গার্হস্থ্য বিজ্ঞানসহ প্রভৃতি ঐচ্ছিক বিষয়ের শিক্ষক। দরিদ্র পরিবারে মেয়ে আসমা টাকা যোগাড় করতে না পারায় শিক্ষদের শরণাপন্ন হয় এবং শিক্ষকদেরকে বিষয়টি জানায়। কিন্তু শিক্ষকরা তাকে সহযোগিতার বদলে কটুক্তি ও উপহাস করে। আসমা এ ধরণের ব্যবহার সইতে না পেরে ১৬ জুন (বৃহস্পতিবার) বাড়ি ফিরে আসে এবং ওইদিন রাত সাড়ে ১০টায় নিজের থাকা ঘরে বিষ পান করে। পরে আসমাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মেডিকেলে ভর্তি করা হলে পরের দিনে তার মৃত্যু হয়।
আসমার সহপাঠীরা অভিযোগ করে বলে, কলেজে ভুগোল বিভাগের ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি ৪০০ টাকা ধার্য্য করা হয়। বসন্তপুরের আনসার আলীর মেয়ে আসমা খাতুন ৩০০ টাকা দিতে চায় কিন্তু হাফিজুর রহমান নামে ভুগোল বিভাগের প্রভাষক, টাকা কম না নিয়ে, নাম্বার কম দেওয়ার হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে হত দরিদ্র পরিবারের মেয়ে আসমা ভয়ে আত্মহত্যা করে।
এদিকে, এই সংবাদ প্রকাশিত হলে শেখপাড়া ডি.এম.ডিগ্রী কলেজের ভুগোল বিষয়ের শিক্ষক মোঃ হাফিজ সহ কৃষিশিক্ষা, গাহস্থ্য বিজ্ঞানসহ প্রভৃতি ঐচ্ছিক বিষয়ের অপরাধী শিক্ষক মহোদয়ের চাকুরি চলে যাওয়ার ভয়ে শৈলকুপার স্থানীয় সাংবাদিকদের টাকা পয়সা দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
অভিযুক্ত প্রভাষক হাফিজুর রহমানের সঙ্গে অনেকবার মুঠো ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।